• তাপপ্রবাহের আঁচের সঙ্গেই ফিরল চেনা আর্দ্রতা, এবার গলদঘর্মে দগ্ধ কলকাতা
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: স্বস্তির বৃষ্টি দুরাশা! কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে। শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়া দপ্তর আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সাধারণ থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি রেখেছে। শুক্রবার গোটা দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের দুই দিনাজপুর ও মালদহ জেলার অধিকাংশ জায়গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। এদিনও দক্ষিণবঙ্গের উষ্ণতম স্থানের তকমা পেয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কলা‌ইকুণ্ডা (৪৪.৭ ডিগ্রি)। তবে উল্লেখযোগ্য হল, এদিন কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে চলতি গরমের চরিত্রে কিছুটা পরিবর্তন দেখা যায়। গত কয়েকদিন কলকাতায় গরম হাওয়া বা ‘লু’ বইছিল। গরমে গা পুড়ে যাওয়ার মতো অনুভূতি হলেও ঘাম সেভাবে হচ্ছিল না। এদিন বাতাসে সেই চেনা আর্দ্রতা ফিরে আসে। ভ্যাপসা গরমে গলদঘর্ম হতে হয় মানুষকে। যদিও এদিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বৃহস্পতিবারের তুলনায় প্রায় ২ ডিগ্রি কম (৩৯.৭ ডিগ্রি) ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সোমনাথ দত্ত জানিয়েছেন, উপকূল এলাকার বাতাসে আচমকা কিছুটা জলীয় বাষ্প ঢোকার কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে। তবে এটাও সাময়িক। শুষ্ক হাওয়া সহ গরমের প্রত্যাবর্তন হবে ক’দিনের মধ্যেই। তাপমাত্রাও বাড়বে। আগামী কয়েকদিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১-৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকতে পারে। 

    এদিকে, তীব্র দাবদাহে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে রাজ্যের মোট ৩৩ জন গরমে অসুস্থ হয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় অসুস্থতার সংখ্যা বেশি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, সব জেলাকে এব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের কর্তা সোমনাথবাবু বলেন, ‘আমাদের এখন গরম নিয়ে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, জীবনযাত্রার ধরনে পরিবর্তনের কারণে এখন আমাদের গরম সহ্য করার ক্ষমতা কমে গিয়েছে।’ আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড বলছে, ১৯০৫ সালের এপ্রিলে কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩.১ ডিগ্রি হয়েছিল। গত ৫০ বছরের মধ্যে ১৯৮০ সালের এপ্রিলে কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৭ ডিগ্রি হওয়ার নজিরও আছে। 

    তবে এবার যেভাবে টানা প্রায় ১০ দিন ধরে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলছে, তেমনটা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা শুষ্ক ও গরম বাতাস দক্ষিণবঙ্গজুড়ে সক্রিয় থাকার কারণেই এটা হচ্ছে। এই সময় বঙ্গোপসাগরে বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত বা উচ্চচাপ বলয় তৈরি হলে বাতাসে জলীয় বাষ্প ঢুকে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করে। তখন ঝড়-বৃষ্টিও হয়। এবার এখনও সেরকম কোনও পরিস্থিতি হচ্ছে না। মে মাসের প্রথম দু’দিনেও সেরকম সম্ভাবনা নেই।          
  • Link to this news (বর্তমান)