দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র তীব্র দাবদাহে নয়, তুমুল মোদি বিরোধী কৃষক বিক্ষোভেও পুড়ছে লোকসভা নির্বাচনের আবহ। মোদিকে নয়, ভোটে জেতান ‘ইন্ডিয়া’ প্রার্থীদের— এই আবেদন নিয়ে এবার সরাসরিই ভোটের ময়দানে নামল আন্দোলনকারী কৃষক সংগঠনগুলি। রাজ্যে রাজ্যে চালানো হচ্ছে বিজেপি বিরোধী প্রচার কর্মসূচি। চলছে লিফলেট কিংবা হ্যান্ডবিল বিলি। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই এলাকার মানুষের কাছে সর্বভারতীয় কৃষক নেতাদের স্পষ্ট আর্জি, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে সরিয়ে একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ক্ষমতা গড়ে তুলুন। নাহলে কৃষক এবং শ্রমিক-কর্মচারী তো বটেই,এমনকী সাধারণ মানুষের জীবনও ওষ্ঠাগত হয়ে উঠবে। লাগাতার প্রচারে বারবার তুলে ধরা হচ্ছে, মোদি সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণ না করার সাতকাহন। বিশেষ করে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যকে (এমএসপি) আইনের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়টি। যে ব্যাপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পূরণ করেনি কেন্দ্র। শুক্রবার লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়েই কৃষক বিক্ষোভ যেভাবে আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে, তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
সংযুক্ত কিষান মোর্চা অবশ্য ঘোষণা করেছে, তারা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে সওয়াল করবে না। শুধুমাত্র বিজেপিকে হারানোর দাবিতে সরব হবে। তাই বলা হচ্ছে, ‘এক্সপোজ বিজেপি, পানিশ বিজেপি।’ তবে বিভিন্ন সর্বভারতীয় কৃষক সংগঠনকে রাজনৈতিক ‘মঞ্চ’ ব্যবহারে ছাড় দিয়ে রেখেছে তারা। সেইমতোই দেশের নির্বাচনী আবহে সরাসরি ‘ইন্ডিয়া’র প্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিক্ষোভরত সারা ভারত কিষান সভা, সারা ভারত কিষান মহাসভা, ক্রান্তিকারী কিষান ইউনিয়ন। তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে।
এপ্রসঙ্গে সংযুক্ত কিষান মোর্চার শীর্ষ নেতা তথা সারা ভারত কিষান সভার সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হান্নান মোল্লা বলেন, ‘সংগঠিত মোর্চার স্বাভাবিকভাবে কিছু দায়বদ্ধতা থাকে। চাইলেই নির্দিষ্ট কোনও দলকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলতে পারে না। কিন্তু তার আওতায় থাকা কিষান সংগঠনগুলির প্রতিটি আলাদা ইউনিয়ন। ফলে নিয়মমতো সরাসরি কোনও পার্টিকে সমর্থন দিতে তাদের কোনও বাধা নেই। সেভাবেই প্রত্যক্ষভাবে বিরোধী মহাজোট ইন্ডিয়ার প্রার্থীদের জেতানোর কথা বলছি আমরা। তাছাড়া বিজেপিকে হারানোর কথা বলার অর্থই হল, প্রতিপক্ষকে ভোট দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা। বিজেপিকে হারানোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে। কৃষকরা এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন।’ পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে কৃষকরা তুমুল বিজেপি বিরোধী কর্মসূচিতে শামিল হচ্ছেন। হরিয়ানার বিক্ষোভকারী কৃষকরা হুঁশিয়ারিই দিয়ে রেখেছেন, রাজ্যে বিজেপি কিংবা তার সহযোগী কোনও দলের প্রার্থী অথবা এমপি-এমএলএকে প্রচার করতে দেওয়া হবে না। অর্থাৎ, বিজেপির শিয়রে সমন!