• শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়িতে সিবিআই বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার পেতেই আসরে নামল এনএসজি
    বর্তমান | ২৭ এপ্রিল ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঠিক যেন কোনও থ্রিলার সিনেমার দৃশ্য। সন্দেশখালির মল্লিকপাড়ায় শুক্রবার সকালেই পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের টিম। বাড়ির মেঝে খুঁড়তেই সিবিআই আধিকারিকদের চোখে পড়ে কাগজে মুড়ে কিছু একটা রাখা রয়েছে। কাগজের ঢাকা সরাতেই বেরিয়ে এলো বিপুল অস্ত্রভান্ডার। সেই ভান্ডারে দেশি-বিদেশি সমস্ত রকমের অস্ত্রের হদিশ পেতেই চমকের পর চমক। এজেন্সি সূত্রে খবর, অস্ত্রের সঙ্গে শেখ শাহাজান সম্পর্কিত নথি ও দেশি বোমাও উদ্ধার হয়েছে। বোমাগুলি এনএসজির কমান্ডোরা নিষ্ক্রিয় করেছে। এদিন সকাল থেকেই তল্লাশিতে নেমেছিল সিবিআই। একটা সময় আধিকারিকদের ধারণা হয়েছিল, উদ্ধার হওয়া বস্তুগুলি দেশি বোমা। তখনই ন্যাশনাল সিকিওরিটি গার্ডের (এনএসজি) রোবোটিক টিমের আধিকারিকদের ডাকা হয়। তাঁরা ১০টি বোমা নিষ্ক্রিয় করেন। রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ভেড়িতেও তল্লাশি চালানো হয় বলে খবর। 

    গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে তল্লাশি চালানোর সময় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকদের উপর হামলার তদন্তে নেমেই মল্লিকপাড়ায় পৌঁছেছিল সিবিআই। বিভিন্ন ব্যক্তি ও হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের জেরা করে আবু তালেব মোল্লা নামে এক ব্যক্তির কথা জানতে পারেন আধিকারিকরা। এই আবু তালেব সরবেরিয়া আগরহাটি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের আত্মীয়। সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে তাঁরা জানতে পেরেছিলেন, ইডি আধিকারিকদের খোয়া যাওয়া নথি ও অন্যান্য নথিপত্র শেখ শাহাজাহানের এক ঘনিষ্ঠর কাছে রয়েছে। সেই তথ্য নিয়েই পৌঁছে যায় সিবিআই। তল্লাশির পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৩টি বিদেশি ও ১টি ভারতীয় রিভলভার, ১টি কোল্ট অফিশিয়াল পুলিশ রিভলভার, ১টি করে বিদেশি ও দেশি পিস্তল, ১২০টি ৯ এমএম বুলেট, ৫০টি পয়েন্ট ৪৫ ক্যালিবার কার্টিজ, ১২০টি ৯ এমএম ক্যালিবার কার্টিজ, ৫০টি পয়েন্ট ৩৮০ ও ৮টি পয়েন্ট ৩২ কার্টিজ। 

    সূত্রের খবর, ইডির উপর হামলার পরেই মোট তিনটি জায়গায় অস্ত্রগুলি সরানো হয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল এই মল্লিকপাড়া। সিবিআইয়ের দাবি, গত বছর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে প্রায় দেড় কোটি টাকার অস্ত্র কিনেছিল শাহাজাহান। বিদেশি অস্ত্রগুলি চীন থেকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা হয়ে সন্দেশখালিতে পৌঁছয়। এই অস্ত্রগুলি শাহজাহানবাহিনীর কাছেই থাকত। এছাড়াও ওই বাড়ি থেকে বেশকিছু নথি ও পরিচয় পত্র উদ্ধার হয়েছে। তার সঙ্গে ভুয়ো অস্ত্র লাইসেন্স ও নকল পুলিসের পরিচয় পত্রও পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি গয়নার বাক্স পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। কলকাতার নামী দোকান থেকে কালো টাকায় এইসব গয়না কেনা হয়েছিল বলে অনুমান সিবিআইয়ের। সূত্রের খবর, আবু শাহজাহানের বিশেষ ঘনিষ্ঠ। এই মুহূর্তে তিনি পলাতক। তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘বদনাম করার জন্য কেউ অস্ত্র রেখে এসেছে কি না, তা তদন্ত স্বাপেক্ষ। এতদিন পর সেটা দেখা গেল কেন? সেটা নিয়েও অনেকের প্রশ্ন আছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)