পাকিস্তানের ছত্রছায়ায় দিব্যি আছে সন্ত্রাসবাদীরা। তার আরও একবার প্রমাণ পাওয়া গেল। ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের তালিকায় থাকা মাসুদ আজহার প্রকাশ্যে ফিরে আসার ঘোষণা করেছে। শুধু তাই নয়, এখন থেকে প্রতিদিন সকাল বিকেল তার সমর্থকদের প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছে পুলওয়ামা হামলার মূল চক্রী এই সন্ত্রাসবাদী নেতা। নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই- মহম্মদ বৃহস্পতিবার তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা করেছে। এর আগে মাসুদ আজহারকে শেষবার জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল ১০ বছর আগে। দুবছর আগেই পাকিস্তানি কর্মকর্তারা দাবি করেছিল যে মাসুদ আজহার আফগানিস্তানে ছিল এবং সেখানে নাকি তালিবানিদের সুরক্ষাায় বসবাস করছে।এখন জইশ-ই-মোহাম্মদের মিডিয়া অফিস থেকে সরাসরি জারি করা বিবৃতি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে সন্ত্রাসী নেতা পাকিস্তানেই বসবাস করছে। জইশ-ই-মোহাম্মদ ‘আস্ক মি এনিথিং’ নামে একটি সেলিব্রিটি স্টাইল পরিষেবাও শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জইশের মিডিয়া অফিস দুটি পাকিস্তানি মোবাইল নম্বর প্রকাশ করেছে এবং বলেছে যে সংগঠনের সমর্থকরা টেলিগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং পাঠ্য বার্তা ব্যবহার করে তাদের প্রশ্ন পাঠাতে পারে। মাসুদ আজহার প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০ টা এবং বিকেল ৩টে থকে ৪টের মধ্যে এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে।
আজহারের উপস্থিতির পর পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞরাও প্রশ্ন তুলছেন। আমেরিকায় পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত হুসেন হাক্কানি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, সন্ত্রাসবাদের জন্য পরিচিত ও ওয়ান্টেড মাসুদ আজহার আবার উত্থিত হচ্ছে বল মনে হচ্ছে। বছরের পর বছর দায়বদ্ধ না থাকার পরেও কি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ তাকে আবার বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে দেবে?
অনলাইন মিডিয়া পোর্টাল প্রিন্ট একজন ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে আজহার সম্পর্কে ঘোষণার পর থেকে মনে হচ্ছে যে জইশ-ই-মোহাম্মদ কয়েক মাসের অশান্তি দ্বারা দুর্বল হয়ে পড়া পাকিস্তান সরকার একটি কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীকে অনুমতি দেবে কিনা তা জানার চেষ্টা করছে নিজেকে আবার জনসমক্ষে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত রাখার সাহস জোগাড় করতে। ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পণা করেছিল মাসুদ আজহার। এছাড়াও ২০০১ সালে জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা এবং নয়াদিল্লিতে সংসদে হামলায়ও তার ভূমিকা ছিল।
পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছিলেন, ‘আমার তথ্য অনুযায়ী আজহার পাকিস্তানে আছে।’ কুরেশি বলছিলেন যে তিনি এতোটাই অসুস্থ যে তিনি তার বাড়ি থেকেও বেরতে পারেননা। এর আগে পাঠানকোটে ভারতীয় বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে জইশ-ই-মোহাম্মদের হামলারপরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব সরকার আজহারকে সুরক্ষামূলক হেফাজতে নেওয়ার দাবি করেছিল। কিন্তু বিদেশমন্ত্রীর দাবির মাত্র এক বছর পর পাকিস্তানের একটি আদালত আজহারকে পলাতক অপরাধী বলে ঘোষণা করে।
প্রায় দু বছর আগে পাকিস্তানের সরকারি সূত্র জিও নিউজকে বলেছিল যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখে মাসুদ আজহারকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে বলেছিল। চিঠিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে আজহার পাকিস্তানের কোথাও লুকিয়ে আছে।