লোকসভা ভোটের আগে থেকেই চর্চায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি এ বছরের ভোটে ডেবিউ করবে কি না, মায়ের ছেড়ে যাওয়া কংগ্রেসের গড় রায়বরেলি থেকে জিতবেন কি না, তা নিয়ে সাসপেন্স রয়েই গিয়েছে। এখনও তাঁর নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেনি হাইকমান্ড। এদিকে, তার মাঝেই আচমকা ভাইরাল প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর হিমাচল প্রদেশের বিলাসবহুল বাংলোর ছবি।কী দাবি করা হয়েছে?লোকসভা নির্বাচনের মাঝে সোশ্যাল মিডিয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর হিমাচল প্রদেশের বাংলোর ছবিতে ছয়লাপ। একদিকে, যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষের সমস্ত সম্পত্তি কেড়ে নেবে, সেই প্রেক্ষাপটে এই ভাইরাল ছবি ঘিরে জোর শোরগোল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছে, এই বাংলোটি বেআইনি। প্রিয়াঙ্কাকে কটাক্ষ করে পোস্ট করা হয়েছে, এই সম্পত্তি কংগ্রেসের 'ওয়েলথ ডিস্ট্রিবিউশন' প্ল্যানের মধ্যে যেন ফেলা হয়।
অনুসন্ধানসোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাল পোস্টগুলির সত্যতা যাচাই করেছে নিউজচেকার। দেখা গিয়েছে. ২০২০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পোস্ট করা ছবি নিয়ে সম্প্রতি একাধিক দাবি করা হচ্ছে নেটপাড়ায়। হিমাচল প্রদেশে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার নামে যে বাংলোটি রয়েছে সেটি বেআইনি নয়। তবে খুব কম সময়ের মধ্যে তাঁকে এই বাংলো কেনার অধিকার দেওয়া নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে প্রশাসনিক স্তরে। তার কারণ হিমাচল প্রদেশে বহিরাগত কিংবা কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত নয় এমন কেউ জমি কিনতে পারেন না। তবে ২০০৭ সালে ট্রিবিউন ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নামে ছাবড়া অঞ্চলের এই চার বিঘা জমির উপর তৈরি বাংলোর মালিকানা দেওয়া হল। ৪৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁর নামে এই বাংলোর রেজিস্ট্রেশন হয়। সেখানে দেখানো হয়, হিমাচল প্রদেশের টিন্যান্সি অ্যান্ড ল্যান্ড রিফর্মস অ্যাক্ট ১৯৭২-এর ১১৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বহিরাগতরাও এখানে জমি ক্রয় করতে পারেন। সরকার তাঁকে এই আইনের আওতাতেই জমি বিক্রয় করেছে। প্রতিবেদনে এও উল্লেখ করা হয়, এই আইনের আওতায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের মতো ৮৮১ জনকে হিমাচলে জমি কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ সালে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে পাওয়া যায়, ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে BJP সরকারও হিমাচলে জমি কেনাপ অনুমতি দিয়েছে বহুজনকে।
সিমলা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে ছাবড়ায় চার বিঘা জমির উপর রয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার এই বিলাসবহুল কটেজ। BJP সরকারের আমলেই তিনি এই জমি কেনার অনুমতি পেয়েছিলেন। পাশাপাশি নিউজচেকারের সত্য অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের ম্যানিফেস্টোতে কোনওভাবেই 'রিডিস্ট্রিবিউশন' শব্দটির উল্লেখ করা হয়নি।
সত্যিটা কী?প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার নামে সিমলাতে যে বিলাসবহুল বাংলোটি রয়েছে সেটি বেআইনি নয়। তবে এই বাংলোটি যত অল্প সময়ের মধ্যে প্রিয়াঙ্কার নামে করার ছাড়পত্র মিলেছে, তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে নানা প্রশ্ন রয়েছে।
This story was originally published by Newschecker and translated and edited by Ei Samay Digital