গতবারের ব্যবধান ছিল ২ লাখেরও বেশি। এবার এই কেন্দ্রে মার্জিন বাড়ানোই লক্ষ্য তৃণমূলের। শাসক দলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্র। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুলতান আহমেদের পত্নী সাজদা আহমদ এবারও এই কেন্দ্র থেকে লড়ছেন। তবে, গোটা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একমাত্র চিন্তা উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে। এই কেন্দ্রে প্রচারে বিশেষ মনোনিবেশ তৃণমূল নেতৃত্বের।গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফের উত্থান উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে। বর্তমানে উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রটি যদিও তৃণমূলের। বিধায়ক নির্মল মাজি। তবে প্রথম থেকেই এই কেন্দ্রে খুব বেশি মার্জিনে জয়ী হতে পারেনি তৃণমূল প্রার্থী। ২০১১ সালে এই কেন্দ্র থেকে ২১ হাজারের কিছু ভোটে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল মাঝি। যদিও ২০১৬ সালে সেটা কমে দাঁড়ায় ১৪ হাজারে। অন্যদিকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপির অনেকটা উত্থান হয়। ৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি দখল করে নেয়। ফলে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে মাত্র ১৩ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকে তৃণমূল। যদিও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তা বেড়ে ২১ হাজার হয়েছিল। আবার ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপির হাতে থাকা সমস্ত পঞ্চায়েত হাতছাড়া।
তবে তেহট্ট কাঁটাবেড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতে উত্থান হয় বিরোধীদের। বাম কংগ্রেস এবং আইএসএফের জোট এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে। তবে বিজেপি কোন পঞ্চায়েত না পেলেও এই কেন্দ্রে বিজেপির অবস্থান যথেষ্ট শক্ত। তার ওপর আইএসএফের উত্থান। আর নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে সাংসদ প্রার্থী সাজদা আহমেদ যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে এই কেন্দ্রে প্রচার শুরু করেন। শুধু তাই নয় প্রচার শুরুর দুদিনের মধ্যেই তিনি পৌঁছে যান তেহট্ট কাঁটাবেড়িয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতে। তবে এই কেন্দ্রে দলীয় নেতৃত্বদের নিয়ে কর্মীদের মধ্যে বিস্তর ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে।
সেই কারণে পঞ্চায়েত নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই আমতা ১ নং পঞ্চায়েত সমিতির একটা বড় অংশের সঙ্গে দলের নেতৃত্বদের যথেষ্ট বিরোধ বাধে। এছাড়া উলুবেড়িয়া ২ নং ব্লকের ও একাধিক পঞ্চায়েতের নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ বাধে বিধায়কের। ফলে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে প্রায় ৪০ জন নেতা কর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার ও করা হয়। যারা পঞ্চায়েতে নির্দল হয়েও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিল। ফলে উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রে এই কোন্দল রীতিমতো প্রকট। রাজনৈতিক মহলের মতে এই সমস্যা নিয়ে তৃণমূলকে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়তে হতে পারে।
গরমে তেষ্টা মেটাচ্ছে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা!
যদিও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্র। আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল আজ নব রূপে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিধায়ক নির্মল মাজির উদ্যেগে এখানে প্রায় আড়াইশো শয্যার বড় হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। সংস্কার হচ্ছে আমতার অডিটোরিয়াম। সাংসদ সাজদা আহমেদের উদ্যোগে এই কেন্দ্রের অন্যতম শাটল কক শিল্পকে পুনরুজ্জীবনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প। কন্যাশ্রী, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, পথশ্রী এবং সর্বোপরি লক্ষীর ভান্ডার সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজও তৃণমূলকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে বলে আশা বিধায়ক নির্মল মাজির।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা উদয়নারায়নপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা সবসময় মানুষের পাশে থাকে। সুতরাং এই নিবার্চনেও তারা আমাদের পাশেই থাকবেন।’ বিজেপির প্রার্থী অরুণ উদয় পাল চৌধুরী বক্তব্য, ‘দুর্নীতি সিন্ডিকেট সমস্ত কিছুই আমরা প্রচারে তুলে আনছি। আমরাই এবার এখান থেকে লিড পাব।’