• চাঁদের আলোয় পাটের খেতে জল
    আনন্দবাজার | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকের ভয়, অন্য দিকে, বৃষ্টির দেখা নেই। পাট গাছ বাঁচাতে তাই চাঁদের আলোয় খেতে জল দিচ্ছে চাষিরা। বাড়তি খরচ হলেও সীমান্তে চাষিরা এই পদ্ধতিই বেছে নিয়েছেন।

    তেহট্ট মহকুমা এলাকায় চৈত্রের শেষে কিংবা বৈশাখ মাসে পাট চাষ শুরু হয়। বীজ দেওয়ার পর থেকে জমিতে জলের প্রয়োজন হয়। কৃষি দফতর ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, চারা বেরোনোর পর মাটি ভিজিয়ে রাখা প্রয়োজন। তীব্র গরম ও রোদের তাপে জমি শুকিয়ে গিয়ে খটখটে হয়ে যাচ্ছে। ফলে জলের অভাবে চারা গাছে ক্ষতির সম্ভাবনাও বাড়ছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে সপ্তাহে এক দিন জমিতে জল দিলেই মাটি নরম থাকে। তবে বেশি গরম পড়লে সপ্তাহে দু’দিন জল দিতেই হবে। এখন তাপপ্রবাহে জমি শুকিয়ে ফেটে চৌচির। আবার ভরা দুপুরে কোনও মতেই জমিতে জল সম্ভব হচ্ছে না। চাষিরা জানিয়েছেন, সকালে জমিতে জল দিলে প্রচণ্ড তাপে জল শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার সকালে বা দুপুরে খটখটে রোদে যাওয়াও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তাই সন্ধ্যা থেকে সাত-আট ঘণ্টা ধরে খেতে জল দেওয়া হচ্ছে।

    পাটচাষি দীপক সাহা, মন্টু দাস বলেন, “সকালে জল দিলে জমিতে জল থাকবে না। তাই সন্ধ্যা থেকে খেতে জল দেওয়া হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে জল দিতে তিন ঘণ্টা সময় লাগছে। জলের টান থাকায় সময় যেমন বেশি লাগছে, তেমনই বাড়তি খরচ হচ্ছে। তবে রাতে জমিতে গেলে শরীর অন্তত ঠিক থাকছে।” পাটচাষি ভুবন মণ্ডল, রাজু শেখেরা বলেন, “এক বিঘা জমিতে জল দিতে ঘণ্টায় পাম্প ভাড়া দিতে হচ্ছে। সকালে জমিতে যাওয়ায় দায়। তাই সন্ধ্যায় প্রতিদিন জল দিতে হচ্ছে অল্প অল্প করে। কেউ কেউ দু’দিন অন্তর জল দিচ্ছেন।’’

    তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, “এই গরমে জমিতে বেশি ক্ষণ থাকলেই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা প্রবল। কয়েক সপ্তাহে অসুস্থ হয়ে অনেকেই হাসপাতালে এসেছেন। এই সময় সাবধানে থাকাই শ্রেয়।”

    তেহট্ট ১ সহ-কৃষি আধিকারিক আনন্দকুমার মিত্র বলেন, “চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে। তাঁদের শরীরের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাই তাঁরা সন্ধ্যায় মাঠের কাজ করছেন।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)