মুকুটমণি অধিকারী তৃণমূলের প্রার্থী হতেই মতুয়া ভোটব্যাঙ্কে ভাঙনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে। দলের নেতাকর্মীদের অনেকেরই ধারণা, সেই ভাঙন ঠেকাতেই কাল, রবিবার দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার জনসভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে চেনা ময়দান বগুলাকে।
হাঁসখালির পাশাপাশি কৃষ্ণগঞ্জ, ধানতলা, তাহেরপুরে বেশি সংখ্যায় মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। কৃষ্ণগঞ্জেই বাড়ি প্রাক্তন বিজেপির বিধায়ক, বর্তমানে রানাঘাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর। মতুয়াদের নেতা হিসাবে এই সমস্ত এলাকায় তাঁর ভাল প্রভাব রয়েছে। ফলে এই এলাকায় মতুয়াদের মধ্যে ফাটলের সম্ভাবনাও বেশি। সেই কারণেই নড্ডার জনসভার জন্য মতুয়া বলয়ের মাঝামাঝি বগুলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি সূত্রের দাবি।
গত বিধানসভা ভোটের আগেও মতুয়া ভোট ধরে রাখতে মিঠুন চক্রবর্তীর জনসভার জন্য বগুলাকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল। সেই সভায় উপচে পড়া ভিড়ই ইঙ্গিত দিয়েছিল কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব সহ নদিয়ার দক্ষিণ অংশে ফলাফল কী হতে চলেছে। একই ভাবে এ বারও মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের ভোটারদের মন কোন দিকে, তা-ও নড্ডার জনসভার ভিড় দেখে বুঝে নেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুকুটমণি তৃণমূলে চলে যাওয়ার পর থেকে এলাকার পরিস্থিতি পাল্টেছে। বিজেপি ঘেঁষা মতুয়া সংগঠনের সভাপতি মুকুটমণির জায়গায় নতুন লোক আনা হয়েছে। সংগঠনও নতুন ভাবে সাজানো হচ্ছে। কিন্তু তাতেও মতুয়া ভোট পুরোপুরি অটুট রাখা যাবে কি না তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে সংশয় রয়েছে।
গত লোকসভা ও বিধানসভা মূলত মতুয়া ভোটের কল্যাণেই দক্ষিণ নদিয়ায় বিজেপির জয়জয়কার হয়েছিল। এ বার পরিস্থিতি বিশেষত এই কারণেই আলাদা যে মতুয়াদের বিজেপি-পন্থী সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মুকুটমণি তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ায় তাঁর অনুগামী মতুয়া নেতারা জোড়াফুলের হয়েই ভোট করবেন, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে ঘটছেও তা-ই। ফলে বিজেপির মধ্যে মতুয়া ভোট ধরে রাখার জন্য অতিরিক্ত তৎপরতা দেখা দিয়েছে। সেই তৎপরতার অংশ হিসাবেই কাল বগুলায় নড্ডার জনসভার আয়োজন বলে জানিয়েছেন বিজেপিরই জেলা নেতৃত্বের একাংশ।
যদিও রানাঘাটের বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলছেন, “এর আগে নবদ্বীপে এসে জনসভা করেছেন জে পি নড্ডা। এ বার তাই লোকসভা কেন্দ্রের একেবারে উল্টো দিকে বগুলায় তাঁর সভার আয়োজন করা হয়েছে।”