চলছে ‘গণতন্ত্রের উৎসব’। ভোট প্রচারে মেতেছেন রাজনৈতিক দলগুলির প্রার্থী-নেতা-কর্মী। চড়া রোদে নেমে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এ পাড়ায়, সে পাড়ায়। অষ্টদশ লোকসভা নির্বাচনের এমন আবহে এর গুরুত্ব বোঝাতে রাস্তায় নেমেছেন তরুণা, শুক্লা, মধুছন্দা, রুমি, সবিতা, অপর্ণারা। একটি উন্নত দেশ গঠনে একজন ভোটার কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝাতে কেউ লিখেছেন গান। কেউ তাতে দিয়েছেন সুর। কেউ আবার লিখেছেন কবিতা। খোল, করতাল, হারমোনিয়াম বাজিয়ে সেই কবিতা-গান গেয়ে ঘুরছেন তাঁরাও।
তরুণা, শুক্লাদের সঙ্গ দিচ্ছেন মাধব, উত্তম, চুনিলাল, শান্তনু, কার্তিকরা। এঁরা প্রত্যেকেই কোলাঘাটের একটি স্বেছাসেবী সংস্থার সদস্য। সংস্থাটি প্রতি বছর সমাজ সচেতনতার বার্তা দিয়ে দুর্গা পুজোও করে। তবে এবার ভোটের জন্য লেখা হয়েছে গান। রীতিমতো মহড়া দিয়ে সংস্থাদের সদস্যরা শুরু করে দিয়েছেন তাঁদের ‘অরাজনৈতিক অভিযান’। মূলত কোলাঘাট এলাকায় দু’টি দলে ভাগ হয়ে বিকেল এবং সন্ধ্যায় প্রচার চলছে। টোটোয় চেপে তাঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন রেল স্টেশন, বাজার, হাট, মন্দির-সহ ব্যস্ত এলাকায়। দলে থাকছেন প্রায় ৩০ জন।
ভোট প্রচারের অনুষ্ঠান শুরু হয় গান দিয়ে। একদল যখন গান গাইছেন, তখন নকল ইভিএম, পোস্টার, ফ্লেক্স হাতে তাঁদের ঘিরে থাকছেন বাকিরা। ভোটদানের গুরত্ব নিয়ে ছড়া লেখা রয়েছে পোস্টার ও ফ্লেক্সে। গানের পর থাকছে প্রদর্শনী। কী ভাবে ভোট দিতে হবে, নকল ইভিএম দিয়ে তা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান, স্থানীয় লোকসভা কেন্দ্রের যাবতীয় তথ্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। ভোটদানের গুরত্ব সম্বলিত লিফেলট ছাপানো হয়েছে। কর্মসূচিতে গিয়ে সেগুলি বিলি করছেন সংস্থার সদস্যরা।
গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ওই কর্মসূচি। আগামী ২৫ মে জেলায় ভোট। তার আগে এই কর্মসূচি ২৩ মে পর্যন্ত চলবে। ভোট প্রচারে সাধারণত রাজনৈতিক দলের কথাবার্তা শুনতেই অভ্যস্ত আমজনতা। তবে নিয়ে অরাজনৈতিক প্রচারে গান-বাজনা, প্রদর্শনীতে ভিড় হচ্ছে ভালই। সংস্থার সদস্যা তরুণা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার চাই সরকার গঠনে সবার মতামত থাকুক। সেই লক্ষ্যেই আমাদের এই কর্মসূচি।’’ সংস্থার কাজে খুশি কোলাঘাট ব্লক প্রশাসন। বিডিও অর্ঘ্য ঘোষ বলছেন, ‘‘এ ভাবে আরও অনেকে এগিয়ে এলে ভোটদানের ব্যাপারে মানুষ আরও সচেতন হবেন।’’
কোলাঘাটের রাস্তায় বিকেলে এখন তাই হামেশাই শোনা যাচ্ছে সংস্থার গান— ‘নিজের ভোট নিজেই দিও ভয়ভীতি হীন মনে/ দেশ গঠনে তোমার এ ভোট লাগবে সর্বক্ষণে’।