নিয়ম মেনে আবাস যোজনায় আবেদন করেছেন। টাকাও জমা দিয়েছেন। কিন্তু ঘরের কাজ এখনও শুরু হয়নি। মাটির ভাঙা বাড়িতে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন বিজড়া গ্রামের বহু বাসিন্দা। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এই বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্ব একে অপরকে দায়ী করেছেন।
বিজড়া গ্রামটি দুর্গাপুর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। গ্রামের মনসাতলার বাসিন্দা আলতা বাউড়ি জানান, আবাস যোজনার জন্য বছরখানেক আগে আবেদন জানিয়েছেন। নিয়ম মেনে ৩৫ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমাও করেন। তাঁর আক্ষেপ, কিন্তু বাড়ি নির্মাণের কাজ এখনও শুরু হয়নি। তাই বিপদ জেনেও স্বামী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন ভাঙা মাটির বাড়িতে। একই অবস্থা লতা বাউড়ি, মরি বাউড়ি, পরী বাউড়ি, জাফর মিদ্যাদেরও। তাঁরা জানান, গত এক বছরের মধ্যে তাঁরাও আবাস যোজনার বাড়ির জন্য সব পরিমাণ টাকা করে ব্যাঙ্কে জমা করেছেন। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়ায় পরিবার নিয়ে তাঁরা থাকেন ভাঙা টালির চালের মাটির বাড়িতে। তাঁরা জানান, বৃষ্টিতে দেওয়াল চুঁইয়ে জল পড়ে। আশঙ্কা, যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে দেওয়াল।
তাঁদের আক্ষেপ, অনেক আশা নিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র-সহ আবেদন করেছিলেন। কিন্তু এখনও বাড়ি কেন হল না, তা নিয়ে কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফলে, ভাঙা বাড়িতে অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। লতা, পরীরা বলেন, “কবে নতুন বাড়ি হবে জানি না! শুনছি হবে হবে। কিন্তু কবে। সেটা বুঝতে পারছি না।”
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার টাকা আটকে দেওয়ায় রাজ্যের এমন লক্ষ্য লক্ষ্য গরিব মানুষের বাড়ি আটকে রয়েছে।” তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, রাজ্যের প্রায় ১১ লক্ষ্য উপভোক্তার নাম কেন্দ্রের আবাস যোজনার তালিকায় অনুমোদিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন্দ্র টাকা পাঠায়নি। শেষ পর্যন্ত যদি কেন্দ্রের টাকা না আসে, তা হলে রাজ্য সরকার উপভোক্তাদের বাড়ি নির্মাণের টাকা দিতে শুরু করবে। এ ছাড়া, দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যে আবেদনপত্র জমা পড়েছে, সেগুলিও বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।
বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “কেন্দ্র সরকার টাকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু রাজ্য সরকার টাকার হিসাব দিতে পারেনি।” তাঁর অভিযোগ, “কেন্দ্রের টাকা নিয়ে সব প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে। পকেট ভরেছে তৃণমূলের নেতাদের। তাঁদের জন্যই লক্ষ্য লক্ষ্য মানুষ বিপাকে পড়েছেন।”