Vampire Facial: ফেসিয়াল করাতে গিয়ে বিপত্তি! এইডস আক্রান্ত ৩ তরুণী
এই সময় | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
মুখের তারুণ্য বজায় রাখার সঙ্গে ত্বক হবে এবার ঝাঁ-চকচকে, এক কথায় গ্ল্যামারাস! কে না চায় এমনটা। আর এর এর জন্য মহিলারা ত্বকের যত্ন স্বরূপ নানারকম ফেসিয়ালও করান। আর সেই ফেসিয়াল করাতে গিয়েই বিপত্তি।বিশেষ কসমেটিক চিকিৎসরা 'ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল'-এর ইঞ্জেকশন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র্রে কমপক্ষে তিনজন মহিলা এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য নিউ মেক্সিকোর সবচেয়ে জনবহু শহর আলবুকার্কে ঘটেছে এই ঘটনা। মার্কিন সরকারের কেন্দ্রীয় রোগ নিয়ন্ত্রক ও প্রতিরোধ সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, 'এই প্রথমবার তসমেটিক ইনঞ্জেকশনের মাধ্যমে এইডস সংক্রমণের তথ্য মিলল।'
আমেরিকার স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ, লাইসেন্স ছিল না। ২০১৮ সালে নিউ মেক্সিকোর ওই স্পাটি প্রশাসন বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে জেল রয়েছেন মালিক। এরপর যখন ওই স্পা-এর এক মহিলা গ্রাহকের এইডস সংক্রমণ ধরা পড়ে তখন প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। মুখে রক্ত মেখে ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়াল করিয়েছিলেন তিনি। চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে তদন্তে। জানা যায়,যে সরঞ্জাম একবাই ব্যবহার করার কথা ছিল সেই সরঞ্জাম একাধিকবার ব্যবহার করা হয়েছিল ওই স্পাটিতে। বাদ পড়েনি লেবেলবিহীন রক্তের শিশিও। সিডিসির তথ্য অনুসারে, যে তিন জন নারী এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন— তাঁদের মধ্যে কেউ কখনও অনিরাপদ যৌন সম্পর্কে ছিলেন না। কখনো কোনও এইডস রোগীর রক্তও গ্রহণ করেননি তাঁরা। সিডিসির নিজস্ব অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে, আলবুকার্কের যেসব স্পা ক্লিনিকে পিআরপি বা ভ্যাম্পায়ার ফেসিয়ালের ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন তাঁরা, সেখানকার ইঞ্জেকশনের সূঁচগুলো সঠিক ভাবে জীবাণুমুক্ত করা হয়নি। আর তার ফলেই সংক্রমণ ছড়ায়।
আক্রান্ত ৩ নারীর মধ্যে মধ্যে দু'জনের দেহে ২০১৮ সালে এইডস শনাক্ত হয়েছিল। সেই সময় এই ঘটনা সংক্রান্ত অনুসন্ধান শেষে যে দুই স্পা ক্লিনিকে তাঁরা পিআরপি ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন, সিডিসি সেগুলি বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সঙ্গে ইঞ্জেকশন নিতে যাঁরা আগ্রহী তাঁদের ইঞ্জেকশন নেওয়ার আগে এইচআইভি পরীক্ষা করানো আহ্বান জানানো হয়েছিল। যাতে তাঁরা বিনামূল্যে এই পরীক্ষা করতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় রোগ প্রতিরোধ ও গবেষণা সংস্থা সেই সম্পর্কে নির্দেশনাও দিয়েছিল। তারপর দীর্ঘদিন এই বিষয়ক অনুসন্ধান বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি ফের আরও একজন ভ্য়াম্পায়ার ফেসিয়াল করিয়ে এইডসে আক্রান্ত হওয়ায় সিডিসি ফের সেই অনুসন্ধান কার্যক্রম চালু করেছে ।
কী এই ভ্যাম্পায়াল ফেসিয়াল?
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের জেল্লা কমে, বয়সের ছাপ পড়ে। তবে ত্বকের লাবন্য ধরে রাখতে পুষ্টিকর খাবার, নামীদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেও আশানুরূপ ফল মেলে না অনেক সময়ে, আর তখনই এই ধরনের চিকিৎসার শরণ নেন মহিলারা। এই ফেসিয়ালের সাহায্যে বলিরেখা, ওপেন পোর্স, ব্রণ কিংবা মেচেতার দাগ— সবই দূর করা যায় ।
যে ব্যক্তি এই ফেসিয়াল করাতে চান, প্রথমে তাঁর শরীর থেকে সংগ্রহ করতে হয় বেশ খানিকটা রক্ত। তার পর সেখান থেকে প্লাজমা আলাদা করা হয়। এরপর ত্বকের উপরের স্তরে সেই তরল প্রবেশ করানো হয় ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে। এর তাড়াতাড়ি তৈরি হয় ফলে নতুন কোষ। পুরনো ক্ষত সারাতে বেড়ে যায় ত্বকের নিজস্ব প্রোটিন অর্থাৎ কোলাজেন উৎপাদনও। গোটা পদ্ধতিটি 'লোকাল অ্যানাসন্থেসিয়া' দিয়ে 'মাইক্রোনিড্ল' পদ্ধতিতে করানো হয়। এর ফলে গ্রাহকের ত্বকে বিশেষ ব্যথাও অনুভূত হয় না। কিন্তু এই ফেসিয়ালে ইঞ্জেকশনের ব্যবহার করা হয়। তাই পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। নয়তো ঝুঁকি থেকেই যায় 'এড্স'-এর মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার।