মে মাস এখনও শুরুই হয়নি। এপ্রিল পড়তেই তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রি। দেশের বেশিরভাগ জায়গাই তাপ্রবাহের কবলে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, বিহার প্রতিটা জায়গায় চলছে তাপপ্রবাহ।তীব্র গরমের মধ্যেই ভারতে নির্বাচনক্রমবর্ধমান উত্তাপের মধ্যে ভারতে সাধারণ নির্বাচন পুরোদমে চলছে। শুক্রবার দ্বিতীয় দফার ভোট হয়েছে যখানে দেশের ১৩ টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮টি আসনে নির্বাচন হয়েছে। এই সময়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে লোকজনকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাইহোক, সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ২০১৯ সালের তুলনায় এই আসনে ৪ শতাংশ ভোট কমেছে। মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে যে গড় তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাই এই কম ভোটের জন্য দায়ী। ভোট দেওয়ার আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় জনগণকে বিপুল সংখ্যাক ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন।
তবে এই তীব্র গরম শুধুমত্র ভারতেই সীমাবদ্ধ নেই। গরমে পুড়ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোটি কোটি মানুষ। প্রচণ্ড গরমের কারণে বাংলাদেশ, ফিলিপাইনের সরকার স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত এশিয়ার প্রতিটা অঞ্চল প্রচন্ড গরমে কার্যত সেদ্ধ হচ্ছে। ব্যাংককে তাপমাত্রার পারদ ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়েছে, যার পরে থাইল্যান্ড সরকারকে বৃহস্পতিবার নতুন সতর্কতা জরি করতে হয়েছিল। সেখানকার সরকার জানিয়েছে যে এই বছর এখনও পর্যন্ত হিটস্ট্রোকের কারণে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের তাপমাত্রা গত সপ্তাহে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। তাপপ্রবাহের কারণে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ এর থেকে মুক্তির জন্য মসজিদে পর্যন্ত প্রার্থনা শুরু করেছেন। গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহের কারণে সারা দেশের স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাবিদদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে কারণ এটি পড়াশোনাকে ব্যাহত করবে।
প্রশ্ন উঠছে কী কারণে এমন অবস্থা?বিশেষজ্ঞারা মনে করছেন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ দীর্ঘতর এবং দ্রুততর হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘ এই সপ্তাহে জানিয়েছে যে এশিয়া ২০২৩ সালে জলবায়ু ও আবহাওয়ার হুমকি দ্বারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চল। ফিলিপাইনে সাধারণত মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে গরম থাকে। কিন্তু এবছর এল নিনোর প্রভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। ফিলিপাইনে খরার কারণে অনেক এলাকায় জলের স্তর অনেক নীচে নেমে যাচ্ছে। ফিলিপাইনের প্রায় অর্ধেক প্রদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে খরা ঘোষণা করা হয়েছে। জলের স্তর কমার কারণে ফিলিপাইনের অনেক জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে।