• বেতন বন্ধের প্রতিবাদে চা শ্রমিকদের বিক্ষোভ
    আজকাল | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • অতীশ সেন, ডুয়ার্স: দেড় মাস ধরে বেতন না পেয়ে ক্ষুব্ধ চা শ্রমিকেরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে থানা ঘেরাও করলেন। বানারহাট ব্লকের তোতাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকেরা জানান, চা বাগানের ফ্যাক্টারি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় কাঁচা চা পাতা বিক্রি করেই কোনও ক্রমে বাগান চলছিল। তাঁদের পাক্ষিক মজুরির তিনটি কিস্তি বকেয়া রয়েছে৷ ফলে আর্থিক অনটনের জেরবার হওয়ার পাশাপাশি তাঁরা চা বাগানটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। বকেয়া বেতনের একটি কিস্তি শনিবার তাঁদের দেওয়ার কথা হলেও, সকালে তাঁরা বাগানে কাজে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারেন- এদিন তাঁদের বকেয়া মজুরি প্রদান করা হবে না। এই খবর শুনেই ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে পায়ে হেঁটে বানারহাট থানায় চলে আসেন। তাঁরা থানার বাইরে বসে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশের মধ্যস্ততায় দুপুর নাগাদ শ্রমিকেরা ঘেরাও তুলে নেন।তোতাপাড়া চা বাগানের শ্রমিক রিনা মালপাহাড়িয়া, সাবিনা খাতুন জানান, তাঁদের পাক্ষিক মজুরির তিনটি কিস্তি বর্তমানে বকেয়া রয়েছে। মাঝে মাঝেই চার থেকে পাঁচটি কিস্তিও বকেয়া হয়ে যায়। অনিয়মিত বেতন পাওয়ায় তাঁরা আর্থিক অনটনে ভুগছেন। বেতনের টাকা থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ডের অংশ কেটে নেওয়া হলেও ২০০৬ সাল থেকে পিএফ এর টাকা বাগান কর্তৃপক্ষ জমা করছে না। বেতন ছাড়াও শ্রমিকদের প্রাপ্য অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। শনিবার বেতনের একটি বকেয়া কিস্তি তাঁদের দেওয়ার কথা ছিল। কাজ শুরুর আগে ফ্যাক্টরির সামনে শ্রমিকরা জমায়েত হলে তাঁরা ফ্যাক্টরির গেটে নোটিস দেখতে পান যে, এদিন কোনও টাকা দেওয়া হবে না। এর জেরেই তাঁরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে থানা ঘেরাও করেন। চা শ্রমিক রমেশ টোপো বলেন, তোতাপাড়া চা বাগানের অবস্থা ভাল নেই। শুধু কাঁচা পাতা বিক্রি করে বাগান চলতে পারে না। প্রতি বছর পুজোর বোনাস নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়, সারাবছর বেতন নিয়মিত মেলে না। মালিকপক্ষ ঠিক ভাবে বাগান পরিচালনা করতে না পারলে তারা দায়িত্ব ছেড়ে দিক বলে তিনি জানান। প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পর শ্রমিকদের মজুরি মেটানোর বিষয়ে বানারহাট থানার পুলিশ আধিকারিক চা বাগানের মালিক গোষ্ঠীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন। পুলিশ প্রশাসনের মধ্যস্ততায় মালিক গোষ্ঠী বকেয়া মজুরির দুটি কিস্তি দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ তুলে নেন। বাগান পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নবজিৎ বোরা বলেন, চা শ্রমিকদের বকেয়ার বিষয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী ৩০ তারিখ তাঁদের বকেয়া মজুরির একটি কিস্তি এবং মে মাসের ৩-৪ তারিখ নাগাদ আরও একটি বকেয়া কিস্তি প্রদান করা হবে।
  • Link to this news (আজকাল)