• হাইকোর্টের রায়ে চাকরি গিয়েছে, স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আরও বিপদে চাকরিহারা শিক্ষক
    ২৪ ঘন্টা | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
  • কিরণ মান্না: হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের। চাকরিস্থলে ভাড়া ঘরে থাকতেন শিক্ষক সাগ্নিক জানা। কিন্তু এখন চাকরি নেই দেখে বাড়িওয়ালা ঘর ছেড়ে দিতে বলেছেন। চাকরিহারা শিক্ষক এখন ঘরভাড়া ছেড়ে স্ত্রী ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলে তার বাবা বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না। বাড়ির বাইরে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে দেখে গ্রামবাসীরা তার বাবাকে ঘরে ঢোকানোর কথা বলেন। গ্রামবাসীদের কথায়ও বাবা রাজি না হলে উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি দু'নম্বর ব্লকের মাকলাসি গ্রামের ঘটনা।আরও পড়ুন-'হামলা হলে, হামলা হবে'; মারের বদলে পাল্টা মারের হুঁশিয়ারি দিলীপ ঘোষের

    ২০১৬ সালের এসএসসির প্যানেল ইতিমধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে। চাকরি গিয়েছে খেজুরির সাগ্নিক জানার। সাগ্নিক বছর চারেক আগে এক দুস্থ পরিবারের মেয়ে নিবেদিতাকে বিয়ে করেছিল। তাই সাগ্নিক এর বাবা বীরেন্দ্রনাথ জানা পুত্রবধূকে মেনে নিতে রাজি হয়নি। শুধু তাই নয় বাড়িতেও তুলেছিলেন না। সেই থেকে ঘর ভাড়া নিয়ে ঘাটালে শিক্ষকতার সূত্রে থাকতেন।এখন চাকরি গেছে। নিরুপায় চাকরিহারা শিক্ষক। কিন্তু বাড়িতে ফিরলেও বাবার প্রত্যাখ্যানে দিশেহারা। বাবা বীরেন্দ্রনাথ জানা পেশায় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। তিনি তার জেদের বসে ছেলে বৌমা ও ছোট নাতিকে বাড়িতে তুলতে অস্বীকার করছেন। বর্তমানে উত্তেজন এলাকায় প্রচুর গ্রামবাসী পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় বাড়ির তালা ভেঙ্গে ছেলে বৌমা ও নাতিকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়েছে।ওই শিক্ষকের এক প্রতিবেশী বলেন, বীরেন্দ্রনাথ জানা তাঁর ছেলে, বৌমা ও নাতিকে ঘরে ঢুকতে দেবে না। তারা এতদিন চাকরিস্থলে ছিল। এখন চাকরি চলে গিয়েছে। তাই বাড়িতে ফিরে এসেছিল। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে ঢুকতে দেননি। কী কারণে ওঁর বাবা এমন করছেন তা জানি না। বীরেনবাবু শেষপর্যন্ত পাড়ার লোকজনের অনুরোধে ছেলেকে ঘর খুলে দিয়েছেন। পুলিস এসেছিল।আমরা অনেকবার বীরেনবাবুকে অনুরোধ করেছি। তার পর উনি রাজী হয়েছেন।পাড়ারই এক গৃহবধূ বলেন, কেন উনি ছেলেছে গ্রামে ঢুকতে দেবেন না তার কোনও কারণ বীরেনবাবু দেখাচ্ছেন না। পুলিসে এসেছিল, গ্রামের লোকজনজনের চাপে শেষপর্যন্ত ঘর খুলে দিয়েছেন। কিন্তু উনি হুমকি দিয়েছেন উনি সুইসাইড করে ছেলে-বৌমা ও গ্রামের লোকজনকে ফাঁসিয়ে দেবেন। শাসকদলের নেতা তিনি। তৃণমূলের বড় পদে রয়েছেন তিনি। গ্রামবাসী ওঁর ছেলের পক্ষে।চাকরিহারা শিক্ষক সাগ্নিক জানা বলেন, বাবার সঙ্গে আমার একটা সমস্যা ছিল। বিয়ে নিয়েই সমস্যা। বাবা আমার বিয়ে মেনে নেয়নি। গত ৪ বছর আমি বিভিন্নভাবে বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। উনি বোঝেননি। আত্মীয়সজনকে দিয়েও বোঝানোর চেষ্টা করেছি। উনি কোনও ভাবেই বোঝেননি। বহুদিন পরে আমি বাড়ি ফিরেছি। ঘরে এলে উনি আমার সঙ্গে মিস বিহেভ করেন। এতদিন চাকরি করার জায়গাতেই ছিলাম। হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। আমারাও চাকরি চলে গিয়েছে। এখন ফিরে এসে বাবার হাতে পায়ে ধরে বলি। কিন্তু উনি কোনওভাবে বুঝতে চালনি। গ্রাম বাসীদের সহায়তায় আমি ঘরে ঢুকতে পেরেছি। এখন বাবা আমাকে হুমকি দিচ্ছেন।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)