SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীর নিয়োগ বাতিল করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর এই নিয়োগ বাতিলকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করেছিল মামলা। সোমবার এই মামলাটির শুনানি হতে চলেছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের এজলাসে। এদিকে আশায় বুক বাঁধছেন চাকরি খোয়ানো শিক্ষকরা।এই প্রসঙ্গে স্কুল শিক্ষিকা অশোকনগরের স্বর্ণালী চক্রবর্তী বলেন, 'প্রধান বিচারপতির এজলাসে এই মামলাটি উঠেছে। আশা করি তিনি আমাদের অবস্থাটা বুঝবেন যে আমরা কী পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি।'
কিছুটা একই কথা শোনা গেল বাঁকুড়ার মন্টু বাউড়ির কণ্ঠে। তিনি অশিক্ষক কর্মী। তাঁর কথায়, ‘আমার গোটা পরিবার ভেসে যাবে যদি চাকরিটা না থাকে। আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর দশা। কী ভাবে আমরা চাকরির জন্য অন্য কাউকে টাকা দেব? পুরো পরিবারের দায়িত্ব আমার উপর। আমি চাইব মানবিক দিক থেকে সুপ্রিম কোর্ট বিচার করুক। কয়েকজন অযোগ্যর জন্য সমস্ত যোগ্যদের চাকরি যেন না যায়।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সময়ে বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও মামলা সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হলেও ‘মাস্টার অফ দি রোস্টার’(মামলার গুরুত্ব বুঝে নিজের কাছে রাখা) প্রধান বিচারপতি নিজের কাছে রাখেননি। কিন্তু, এই প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার মামলাটি তিনি নিজেই শুনবেন বলে ঠিক করেছেন। শীর্ষ আদালতের আইনজীবীদের একাংশ এই নিয়োগ বাতিল মামলাটি অন্য কারও এজলাসে না দিয়ে নিজের হাতে রাখার বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে দেখছেন।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে তোলপাড় চলছে বঙ্গ রাজনীতিতে। সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে মামলা। সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বর রশিদির ২৮২ পাতার রায়ে জানিয়েছিল, প্রায় ২৬ হাজার জন অর্থাৎ ২০১৬ সালের SSC নিয়োগের গোটা প্যানেলটাই বাতিল।
এদিকে চাকরিহারাদের একাংশের দাবি, প্রায় পাঁচ হাজারের কাছাকাছি নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিল। সেক্ষেত্রে গোটা প্যানেলটাই কেন বাতিল করা হল? তাঁদের আরও দাবি, 'বারবার বলা হয়, কোনও যোগ্য বা নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পান। কিন্তু, এক্ষেত্রে তো অনেক যোগ্যের চাকরি চলে গেল।’ এখন দেখার সুপ্রিম কোর্ট ঠিক কী সিদ্ধান্ত নেয় এই প্রসঙ্গে।