বরফে ঢাকা সিকিমে থিকথিকে ভিড়, মাত্র ৩ মাসে ছাঙ্গু-নাথু লা-গুরুদংমার ভ্রমণ ৩ লাখ পর্যটকের
এই সময় | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
চলতি বছর সিকিমে উপচে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়। সে রাজ্যে পর্যটন এবং অসামরিক পরিবহণ দফতরের প্রকাশ করা তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে এখনও পর্যন্ত সিকিমে ২ লাখ ৯০ হাজার ৪০১ জন পর্যটকের পা পড়েছে। ৩১ মার্চ অর্থাৎ বছরের প্রথম কোয়ার্টারেই বিপুল সংখ্যক মানুষ সিকিম বেড়াতে গিয়েছেন। এর মধ্যে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৭ জন ভারতীয় পর্যটক। বিদেশ থেকে বেড়াতে গিয়েছিলেন ৩০ হাজার ৮৬৪ জন।গত ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সিকিমে ভয়াবহ মেঘ ভাঙা বৃষ্টি এবং ধসের জেরে পর্যটন ব্যবসার ব্যহত হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে ফের চাঙ্গা হচ্ছিল সিকিমের পর্যটন শিল্প। চলতি বছরের শুরুতেই এত সংখ্যাক পর্যটকের ভিড় উপচে পড়া নতুন করে আশা জোগাচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে সিকিমে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়। ৭০ জনের এখনও পর্যন্ত কোনও হদিশ মেলেনি। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল উত্তর সিকিম এলাকা। এরপর থেকে ট্যুরিস্টদের আনাগোনাও কমে গিয়েছিল সেই সমস্ত এলাকায়। তবে ধীরে ধীরে সিকিম পর্যটনের জৌলুস ফিরছে বলেই ইঙ্গিত দিচ্ছে আর্লি ফুটফল ট্রেন্ড।
সিকিমের পর্যটক ব্যবসাকে পুনরায় চাঙ্গা করে তোলার পিছনে অনবরত পরিশ্রম করে চলেছেন প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষ। এর মধ্যে রয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ী, ট্যুর অপারেটর, ট্যাক্সিচালক, ট্রাভেল গাইড থেকে শুরু করে ছোট বড় অসংখ্য ব্যবসায়ী, যারা সিকিম পর্যটকের শিরদাঁড়া।
কোভিড মহামারীর আগে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বার্ষিক ব্যবসা হত সিকিম পর্যটন শিল্পে। তবে অতিমারি পর্বে তা অনেকটাই ধাক্কা খায়। পুনরায় আর্থিকভাবে সাফল্য পাওয়ার সময় আসন্ন বলে মনে করছে সিকিম প্রশাসন।
পর্যটকদের জন্য গোটা সিকিম জুড়ে কাজ করছে ১ হাজার ৭২৫টি ট্রাভেল এজেন্সি। সিকিমে থাকার জন্য হোটেলগুলিতে প্রায় ৩৮ হাজার ২০৮টি বেড রয়েছে পর্যটকদের জন্য। পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াতের জন্য হাজার ২০৬টি লাক্সারি ট্যাক্সি পরিষেবা রয়েছে। ৬ হাজার ২০০টি সাধারণ ট্যাক্সি রয়েছে। ছোট গাড়ির সংখ্যা ১২ হাজার ২৩২ জন।
এক ঝলকে সিকিম পর্যটনের পূর্ব পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাবে, ২০১৩ সালে সিকিম বেড়িয়েছেন ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৭৪৯ জন পর্যটক। ২০২৩ সাল অর্থাৎ ঠিক ১০ বছরের মাথায় এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৩। চলতি বছরে সিকিমে ১২ লাখের বেশি পর্যটক হওয়ার সম্ভাবনা প্রশাসনের।
আগামীদিনে সিকিমে প্রথম রেললাইন তৈরি হলে নতুন করে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। প্যাকিয়ং বিমানবন্দর নতুন করে পরিষেবা শুরু করায় এই ভিড় সম্প্রতি বেড়েছে।