Richest States In India: দেশের ধনীতম রাজ্য কোনটি? কত নম্বরে বাংলা? জানুন
এই সময় | ২৮ এপ্রিল ২০২৪
সংস্কৃতির মতোই বৈচিত্র্যময় ভারতের অর্থনৈতিক চালচিত্র। গ্রস স্টেট ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট (GSDP)-এর দৌড়ে নির্দিষ্ট কিছু রাজ্য শীর্ষ স্থানে রয়েছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক শক্তিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে এই রাজ্যগুলি। এই প্রতিবেদনে ভারতের সাতটি ধনী রাজ্যের নিয়ে আলোচনা চলবে। এই রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক দক্ষতা এবং মূল শিল্পগুলির উপর প্রাধান্য দেয়। আর সেই সব বিষয়ই সেই রাজ্যগুলির বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।মহারাষ্ট্র- ভারতের যে রাজ্যে সবথেকে বেশি শক্তিশালী আর্থিক কাঠামো , তা হল বাণিজ্য নগরী মুম্বইয়। দেশের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রই। জিএসডিপি ৩১ ট্রিলিয়নেরও বেশি। অর্থনৈতিক কেন্দ্র এই মুম্বই। মুম্বইয়ে দেশের প্রধান ব্যাঙ্ক, মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেশন এবং স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে। ভারতের সামুদ্রিক বাণিজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ শহরের বন্দরটি। আর সেই কারণে এই রাজ্য়ের অর্থনৈতিক শক্তি আরও দৃঢ় হচ্ছে। মহারাষ্ট্রকে উৎপাদনের ঘাঁটি বলা চলে। রাজ্যের সাংস্কৃতিক অবদান, বিশেষ করে বলিউডের মাধ্যমে এর অর্থনৈতিক খুঁটি আরও শক্ত হওয়ার মতো বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে।
তামিলনাড়ু- উৎপাদনী শক্তির উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে তামিলনাড়ুর অর্থনীতি। ২০ ট্রিলিয়ন GSDP। ব্যবসায় দখল নিয়েছে টেক্সটাইলগুলি। বিভিন্ন ধরনের কাপড় এবং পোশাক তৈরির সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে এই রাজ্যে। এই রাজ্যের পোশাকের দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারেও বিশাল চাহিদা ও পরিচিতি রয়েছে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য উৎস স্বয়ংচালিত শিল্প। এছাড়াও তামিলনাড়ু যথেষ্ট অগ্রগতি করেছে তথ্যপ্রযুক্তিতে। একটি সমৃদ্ধশালী আইটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলেছে এই রাজ্য। এই বিষয়টি সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগ এবং প্রতিভাকে আকৃষ্ট করেছে। এই রাজ্যের অটো ম্যানুফাকচারিং শিল্পও খুব শক্তিশালী।
গুজরাট- গুজরাটের অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ দাঁড়িয়ে রয়েছে কৌশলগত অবস্থান এবং অগ্রগতি-চিন্তা নীতির উপর। রাজ্যের প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন GSDP। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য রাজ্যের উপকূল শুধুমাত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ গেটওয়ে নয় বরং সমৃদ্ধশালী পেট্রোকেমিক্যাল এবং ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে উল্লেখযোগ্যা ভূমিকা গ্রহণ করে। শিল্প অঞ্চল, ব্যবসা এবং বিনিয়োগের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করেছে গুজরাট। এই রাজ্যের কৃষি, সর্দার সরোবর বাঁধের মতো উদ্যোগ, রাজ্যের খাদ্য নিরাপত্তা এবং গ্রামীণ অর্থনীতিও বড় অবদান রাখছে অর্থনৈতিক ভিত মজবুত করতে।
উত্তরপ্রদেশ- দেশের কৃষি উৎপাদনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উত্তরপ্রদেশ । এই রাজ্যে ১৯.৭ ট্রিলিয়ন জিএসডিপি। খাদ্যশস্যের বৃহত্তম উৎপাদকদের মধ্যে এই রাজ্য। ভারতের খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখে এই রাজ্য। রাজ্যের উর্বর গাঙ্গেয় সমভূমিতে ফলে গম, চাল, আখ এবং আলু-সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল। কৃষি শক্তির পাশাপাশি, পরিষেবা খাতে দ্রুত বৃদ্ধি দেখছে উত্তরপ্রদেশ। এই রাজ্যের নজর রয়েছে আইটি এবং পর্যটনের উপরেও।
কর্নাটক- মূলত বেঙ্গালুরু শহর দ্বারা চালিত কর্নাটকের অর্থনৈতিক শক্তি । প্রায়শই এই রাজ্যকে ভারতের সিলিকন ভ্যালি বলা হয়। এর জিএসডিপি ১৯.৬ ট্রিলিয়ন। আইটি হাব হিসেবে এই শহরটি বিশ্বব্যাপী খ্যাত। এখানে দেশের সবচেয়ে বড় বড় আইটি সংস্থা। রয়েছে একাধিক স্টার্টআপগুলির কেন্দ্রও। কর্নাটকে একটি সহায়ক ইকোসিস্টেম খুঁজে পেয়েছে বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রিও। এই রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক বায়োটেক ফার্ম খোলা হয়েছে। যার ফলে এই রাজ্য জৈবপ্রযুক্তি গবেষণা ও উন্নয়নে শীর্ষে রয়েছে ।
পশ্চিমবঙ্গ- পশ্চিমবঙ্গের জিএসডিপি ১৩ ট্রিলিয়নের বেশি। এর অর্থনীতি লুকিয়ে রয়েছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং কৌশলগত বাণিজ্য অনুশীলনের মধ্যে। কলকাতা এই রাজ্যের রাজধানী, ঐতিহাসিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য বন্দর। আজও এই শহর একটি ব্যস্ত বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবেই পরিচিত। ব্রিটিশ শাসিত ভারতে কলকাতাই ছিল দেশের রাজধানী। স্থাপত্য, শিল্পকলা এবং বৌদ্ধিক জীবনে একটি অনস্বীকার্য চিহ্ন রেখেছে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে এই রাজ্যে মর্যাদায এখনও পর্যন্ত অটুট। ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং সমসাময়িক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের এই সংমিশ্রণ, পাট, চা, ইস্পাত এবং বস্ত্রের মতো মূল শিল্পের বৃদ্ধি পশ্চিমবঙ্গকে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার এক অনন্য সংমিশ্রণ হিসাবে তৈরি করেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ- অন্ধ্রপ্রদেশের জিএসডিপি ১১.৩ ট্রিলিয়ন। তথ্য প্রযুক্তি এবং জৈবপ্রযুক্তির উপর কৌশলগত জোর দিয়েছে অন্ধ্র প্রদেশ। আর তার ফলেই নিজেকে উদ্ভাবন এবং উন্নয়নের কেন্দ্র হিসাবে উল্লেখযোগ্য স্থানে প্রতিষ্ঠা করেছে। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে এই রাজ্যের রাজধানী, অমরাবতী, বিশ্বব্যাপী আইটি হাব এবং বায়োটেক সংস্থাগুলি। অন্ধ্রপ্রদেশে সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং একটি দক্ষ কর্মশক্তির মেলবন্ধন ঘটেছে।