• 'সুপার সাব' সাহালের শেষ মিনিটের গোলে আইএসএল ফাইনালে বাগান, হাবাসের তৃতীয়বার...
    আজকাল | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • মোহনবাগান - ২ (কামিন্স, সাহাল)ওড়িশা এফসি - ০সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: রবিবাসরীয় রাতের যুবভারতীর রং সবুজ মেরুন। অঙ্ক মিলিয়ে দিলেন আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ওড়িশাকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে মোহনবাগান। চারবারের মধ্যে মোট তিনবার। তাও আবার ব্যাক টু ব্যাক। তারমধ্যে হাবাসের তৃতীয়বার। মুম্বই সিটি এফসি ছাড়া কোনও দল লিগ শিল্ড জেতার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এবার সেই হাতছানি রয়েছে বাগানের সামনে। ভুবনেশ্বরে ১-২ গোলে হারের রাতে বুক চিতিয়ে হাবাস বলেছিলেন, কলকাতায় রেজাল্ট পাল্টে দেব। কথা রাখলেন আইএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচ। দু"বার ট্রফি জিতেছেন। একবার রানার্স। আগামী শনিবার যুবভারতীতে আইএসএল জয়ের হ্যাটট্রিকের সুযোগ থাকবে বর্ষীয়ান কোচের সামনে। এদিন সবুজ মেরুনের হয়ে গোল করেন জেসন কামিন্স এবং সাহাল আব্দুল সামাদ। দুই স্প্যানিয়ার্ধের মস্তিষ্কের লড়াইয়ে টেক্কা দিলেন হাবাস। ৬২ হাজারের যুবভারতীর সমর্থনে শেষ মিনিট পর্যন্ত গোলের আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যায় বাগানের স্ট্রাইকিং ফোর্স। চোট সারিয়ে মাঠে ফিরেই ম্যাচ উইনিং গোল সাহাল আব্দুল সামাদের। ওড়িশা শিবির হ্যান্ডবলের আবেদন জানালেও রেফারি কর্ণপাত করেনি। কারণ গোলটা ন্যায্য। অমরিন্দরের হাতে লেগে সাহালের মাথা ছুঁয়ে গোললাইন অতিক্রম করে। যদিও তারপরও বলটা পা দিয়ে ঠেলেন সাহাল। দুই সেমিফাইনাল মিলিয়ে ৩-২ গোলের গড়ে ফাইনালের ছাড়পত্র সংগ্রহ করল বাগান। এদিনের জয় পোয়েটিক জাস্টিস। আগাগোড়াই দাপট ছিল হাবাসের দলের। আরও বেশি ব্যবধানে জেতা উচিত ছিল। এদিন রয় কৃষ্ণ, মরিসিওকে পুরোপুরি অকেজো করে দেন হাবাস। মাস্টার ট্যাক্টিশিয়ানকে কুর্নিশ জানাতেই হবে। ব্যারেটো, চিডি, সোনি, দিমিত্রি..পাসিং দ্য লেগাসি...। ম্যাচ শুরুর আগে গ্যালারিতে দেখা যায় টিফো। মাঠেও তার প্রতিফলন। চলতি মরশুমে মোহনবাগানের সবচেয়ে ধারাবাহিক ফুটবলারের নাম দিমিত্রি পেত্রাতোস। সেমিফাইনালের প্রথম লেগে একাই খেলেছিলেন। এদিনও উজ্জ্বল। দলে দুটো পরিবর্তন করেন আন্তোনিও হাবাস। প্রথম লেগে লালকার্ড দেখায় ছিলেন না আর্মান্দো সাদিকু। তাঁর জায়গায় শুরু করেন জেসন কামিন্স। অভিষেক সূর্যবংশীর বদলে নামান দীপক টাংরিকে। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই অলআউট ঝাঁপায় সবুজ মেরুন ব্রিগেড। যা প্রত্যাশিত ছিল‌ই। দু"গোলের ব্যবধানে জিততে হলে প্রথমার্ধে গোল করতেই হতো। ম্যাচের ২০ মিনিটে প্রথম সুযোগ। দিমিত্রির ফ্রিকিক থেকে ইউস্তের হেড সরাসরি তালুবন্দি করেন অমরিন্দর। তার দু"মিনিটের মধ্যে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। লিস্টনের পাস থেকে দিমিত্রির শট ফিস্ট করেন ওড়িশা কিপার। বাঁ পায়ের শটে ফিরতি বল গোলে ঠেলেন জেসন কামিন্স। আইএসএলে ১১তম গোল। প্রথমার্ধে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ ছিল বাগানের সামনে। কিন্তু থাপার পাস থেকে অমরিন্দরের গায়ে মারেন লিস্টন। ভুবনেশ্বরে রয় কৃষ্ণকে সামলাতে হিমশিম খায় বাগান রক্ষণ। ডানদিক থেকে দুরন্ত গতিতে বিপক্ষ বক্সে ত্রাস সৃষ্টি করছিলেন। কিন্তু এদিন পুরোনো মাঠে সেরা ছন্দে পাওয়া যায়নি রয়কে। অবশ্য তার জন্য হাবাসের মস্তিষ্কের প্রশংসা করতে হবে। প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ে সেরা সুযোগ ওড়িশার। রয় কৃষ্ণর পাস থেকে ইসাক রালতের হেড গোললাইন থেকে ফেরত পাঠান ইউস্তে। দ্বিতীয়ার্ধ ঘটনাবহুল। সুযোগের পর সুযোগ। বিরতির পর অন্তত তিনটে গোল করতে পারত বাগান। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে একা অমরিন্দরকে সামনে পেয়েও তাঁর হাতে তুলে দেন মনবীর। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন কামিন্স। তাঁকে পাস করলে অবধারিত গোল ছিল। তার তিন মিনিট পর আবার সহজ সুযোগ মিস। মণবীরের ক্রস থেকে থাপার হেড অমরিন্দরের পায়ের ফাঁক দিয়ে গলে গেলেও সেকেন্ড পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে মুহুর্মুহু আক্রমণ বাগানের। ৭৫ মিনিটে দিমিত্রির কর্নার থেকে ইউস্তের হেড সরাসরি ফিস্ট করে বাঁচান ওড়িশা কিপার। ৯০ মিনিটের মাথায় আবার সুযোগ নষ্ট। সাইড নেটে মারেন পরিবর্ত ফুটবলার কিয়ান। সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এল ৯০+৩ মিনিটে। মনবীরের বাড়ানো বল অমরিন্দরের হাতে লেগে সাহালের মাথা ছুঁয়ে গোলে ঢুকে যায়। চোট সারিয়ে নেমেই নায়ক। তবে এদিন দারুণ খেলেন মনবীরও। দ্বিতীয় গোলে অ্যাসিস্ট ছাড়াও একাধিক ঠিকানা লেখা পাস বাড়ান। একটি নিশ্চিত গোলও বাঁচান। ম্যাচের সেরা মনবীর। ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী
  • Link to this news (আজকাল)