এই সময়: বিরোধী শিবির যা-ই বলুক না-কেন, লোকসভা ভোটের প্রথম দু’দফা মিটে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিশ্চিত—এ বার ভোটে চারশো পার করবেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে থেকেই কংগ্রেসের ‘সম্পত্তি পুনর্বণ্টন’কে হাতিয়ার করে সমস্ত বিরোধী শিবিরকে নিশানা করছেন নমো। পাল্টা ‘হেটস্পিচ’-এর অভিযোগ তুলে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস তথা ‘ইন্ডিয়া’ জোট। সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মনোভাব কী—‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তা স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী।দিবাকর আস্থানা, অখিলেশ সিং ও সিদ্ধার্থকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাম না-করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে মোদী বলেছেন—‘আপনারা হয়তো খেয়াল করেছেন, কংগ্রেসের যুবরাজ বার বার বলেছেন, তাঁরা এক্স-রে করবেন। ওরা কৃষকদের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে দেখবে কত জমি রয়েছে! সাধারণ মানুষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাদের সম্পত্তির হিসেব নেবে। ওরা মহিলাদের গয়নার হিসেবও নেবে।’
তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের সংবিধান সব সংখ্যালঘুর সম্পত্তিকে সুরক্ষিত করে। দেশের এবং দশের উন্নয়ন, মঙ্গলসাধনই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ—কাউকে সুবিধা দিতেই নীতি বানাই না।’ কর্নাটকেও যে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার আসলে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ন্যায় বিচার দিতে পারেনি, সেই অভিযোগও তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকার তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দেওয়া হবে বলে যে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা, তার প্রেক্ষিতে মোদীর জবাব—‘যারা (পড়ুন কংগ্রেস) সব থেকে বেশিবার সংবিধান পরিবর্তন করেছে, তারাই বলছে, আমরা সংবিধান পরিবর্তন করব!’
এবারের লোকসভা ভোটে অন্যতম বড় ইস্যু হলো কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা, যা নিয়ে বিরোধীরা একসুরে কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট করেছে। কিন্তু মোদী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ইডি বা সিবিআইয়ের মতো এজেন্সিগুলি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনও তদন্ত করছে না। পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি জানান, খুব সামান্য সংখ্যক মামলাই হয়েছে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে।
‘এক দেশ-এক ভোট’, ‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ কার্যকর করা নিয়েও মোদীকে কাঠগড়ায় তুলেছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু তৃতীয়বার ক্ষমতায় এলে এগুলো যে তাঁর সরকার কার্যকর করবেই—সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন মোদী। তাঁর যুক্তি, শুধু একটা ভোটে জিতে এসে পরের ভোটে জেতার লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা নয়, সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই তাঁর সরকার কাজ করতে চায়। রাজ্যপালের সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে যে সংঘাত চলছে, সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। সব রাজ্য সরকারেরই উচিত রাজনৈতিক মতপার্থক্য দূরে ঠেলে রাজ্যপাল পদের মর্যাদা রক্ষা করা।