Recruitment Scam Case: সরকারি ছুটির দিনেও সরকারি ছাড়পত্র! জালিয়াতি ফার্মাসিতে
এই সময় | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
হিমাদ্রি সরকার ও স্নেহাশিস নিয়োগী
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতির তদন্তে নেমে বৈধ অনুমোদন ছাড়া শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের হদিশ পেয়েছিল সিবিআই এবং ইডি। অভিযোগ ছিল, উপযুক্ত পরিকাঠামো না-থাকা সত্ত্বেও অর্থের বিনিময়ে কিছু কেন্দ্রকে অনুমোদন পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বার রাজ্যের কিছু ফার্মাসি কলেজের বিরুদ্ধে সরকারি অনুমোদন জাল করার অভিযোগ উঠল।আপাতত এমন তিনটি ফার্মাসি কলেজের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করেছে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট’। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি নথি জালিয়াতি, জাল নথিকে আসল বলে ব্যবহার করা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং একই উদ্দেশ্যে অপরাধের মতো বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে বিধাননগর কমিশনারেট।
কাউন্সিল জানিয়েছে, ফার্মাসির ডিপ্লোমা কলেজ চালুর জন্য প্রথমে তাদের কাছে কনসেন্ট টু অ্যাফিলিয়েশনের আবেদন জানাতে হয়। সংশ্লিষ্ট কলেজের পরিকাঠামো এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখে কাউন্সিল অনুমোদন দিলে পরবর্তী স্তরে ‘ফার্মাসি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া’র কাছে আবেদন জানাতে হয় ওই কলেজ কর্তৃপক্ষকে। সম্প্রতি রাজ্য কাউন্সিল আবেদনের নথিপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখে, ২০২৩-২৪ বছরের জন্য ফার্মাসি কাউন্সিল যে ১৭৪টি কলেজকে অনুমোদন দিয়েছে, তাদের মধ্যে তিনটিকে কনসেন্ট টু অ্যাফিলিয়েশন দেওয়াই হয়নি।
তাহলে ফার্মাসি কাউন্সিল তাদের অনুমোদন দিল কী ভাবে? এরপরে রাজ্যের টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল কাউন্সিল অনুসন্ধানে নেমে জানতে পারে, কলেজগুলি জাল নথি জমা দিয়েছে। তার মধ্যে একটি কলেজ যে কনসেন্ট টু অ্যাফিলিয়েশন জমা দিয়েছে, তা আদৌ তাদের নামে ইস্যু করা হয়নি। ওই মেমো নম্বরের কনসেন্ট ইস্যু করা হয়েছিল অন্য একটি কলেজের নামে।
সেখানে জালিয়াতি করে নিজেদের নাম বসিয়েছে অভিযুক্ত কলেজ। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের অন্য একটি কলেজ গত বছরের ৫ মে-র একটি কনসেন্টের নথি জমা দিয়েছে। কাউন্সিলের দাবি, সে দিন বুদ্ধজয়ন্তীর জন্য সরকারি ছুটি ছিল। ফলে ওই দিন কোনও মেমো ইস্যুই হয়নি। উত্তরবঙ্গের অন্য একটি কলেজের ক্ষেত্রেও একই ভাবে জালিয়াতি করা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, সরকারি ছুটির দিনে কাউন্সিলের নথি ইস্যু হলো কী ভাবে? সেটার সঙ্গে কি কাউন্সিলের অন্দরের কোনও কর্মীর যোগ রয়েছে? ২০২৩-২৪ বছরে যদি জাল কনসেন্ট টু অ্যাফিলিয়েশন ইস্যু হয়, তা হলে বছর শেষের পরে তা নজরে এল কেন? আরও বড় প্রশ্ন, বৈধ অনুমোদন ছাড়া এই কলেজগুলি যদি ছাত্র ভর্তি করে ক্লাস শুরু করে থাকে, তা হলে সেই পড়ুয়াদের কী হবে? তাঁদের কি কলেজগুলো টাকা ফেরত দেবে?
কাউন্সিলের বক্তব্য, এ বছর জানুয়ারিতে বিষয়টি প্রথম তাদের নজরে আসে। তারা ফার্মাসি কাউন্সিলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পরে নিজেরা অনুসন্ধান চালিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্ত কলেজগুলিকে শো-কজ়ও করেছে তারা। এখন দেখার, পুলিশি তদন্তে এর পিছনে আরও বড় কোনও চক্রের হদিশ মেলে কি না।