বিয়ের পর স্ত্রীয়ের থেকে শারীরিক সুখ পায়নি স্বামী। এই নিয়ে প্রায়শই ঝগড়া-অশান্তি লেগে যাক দম্পতির মধ্য়ে। আর তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ব্যক্তি। খুন করে স্ত্রীকে। স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর হাতিয়ে নেয় তাঁর বিমার টাকাও। আর সেই বিমার টাকা দিয়েই কিনে আনে মস্ত এক সেক্স ডল। সেই সেক্স ডলের মাধ্যমেই মেটাতে থাকে নিজের যৌনতৃপ্তি। এমন ঘৃণ্য় কাজ করেও পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছিল দীর্ঘ সময়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। শেষপর্যন্ত পুলিশের জালে অভিযুক্ত। বর্তমানে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলবন্দি।আমেরিকার কানসাসের ব্যক্তির কীর্তি প্রকাশ্য়ে আসতেই নিন্দার ঝড়। ২০১৯ সালে স্ত্রীকে খুন করে সে। খুনের পর স্ত্রীয়ের বিমার টাকাও হাত পেয়ে যায় সে। তারপর সেই টাকা দিয়ে কিনে আনে মস্ত সাইজের এক সেক্স ডল, যেটির দাম প্রায় ২ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রা ১.৬৬ লাখ টাকা)। স্ত্রীয়ের বিমার টাকা হাতে পাওয়ার দুই দিন পরেই সেক্স ডলটি কিনে আনে ব্যক্তি। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম কোলবি ট্রিকল। দুই বছর তদন্ত চালিয়ে পুলিশ শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালে ওই ব্যক্তিকে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করে। ২০২৩ সালে ব্য়ক্তিকে আদালত যাবজ্জীবন সাজা দেয়।
স্ত্রীকে খুনের পর পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতে প্ল্যানও ফেঁদেছিল কোলবি। স্ত্রীকে খুনের পর নিজেই ৯১১ নম্বরে ফোন করে সে জানায়, ২৬ বছর বয়সী স্ত্রী ক্রিস্টেন ট্রিকল কানসাসের হেজ-এ বাড়িতেই নিজেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এক পুলিশ অফিসার। প্রাথমিক ভাবে কোলবির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁর সন্দেহ হয় স্ত্রীয়ের মৃত্যুর সঙ্গে যোগ থাকতে পারে কোলবির। তবে ক্রিস্টন ট্রিকলকে খুনের তিন দিন পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করা হলে, ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
খুনের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আর্মি রিজার্ভের প্রাক্তন কর্মী কোলবি তার স্ত্রীয়ের নামে থাকা দুই জীবন বিমার টাকা ভাঙান। মোট ১ লাখ ২০ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যার অঙ্ক ১০ কোটিরও বেশি) পায় কোলবি। তদন্তাকারীরা জানতে পারেন বিমার টাকা হাতে পাওয়ার পর দু'দিন পর ২০০০ ডলার ব্যায়ে একটি মানুষ সমান সেক্স ডল কেনে সে। বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলেন এত তদন্তকারী অফিসার। তাঁরই সন্দেহ হয়, প্রিয়জন তথা স্ত্রীয়ের মৃত্যুর পর একজন কী ভাবে সেক্স ডল কিনতে পারে। বিষয়টিতে নিশ্চয় কোন গন্ডগোল থাকতে পারে বলে অনুমান করেন তিনি। কোলবির সেক্স ডল কেনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন ক্রিস্টনের কাকিমা ডেলিন রাইস। শুধু সেক্স ডল কেনাই নয় স্ত্রীয়ের জীবন বিমার পুরো টাকাই উড়িয়ে দেয় কোলবি। বেশ কিছু বাদ্য যন্ত্র, ভিডিয়ো গেম কিনে সেই টাকা খরচ করে ফেলে সে।
২০২১ সালে জুলাই, খুনের প্রায় ২১ মাস পর ক্রিস্টন ট্রিকলকে হত্যা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলা চলাকালীন গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কোলবির সেক্স ডল কেনার বিষয়টি আদালতে জানানো হয়। অভিযুক্ত যুবকের মা তখন ছেলের সপক্ষে দাবি করেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেলে একা থাকতে ভয় পেত। প্রতি রাতে দুঃস্বপ্ন দেখত। যৌন চাহিদা মেটাতে নয় বরং একাকিত্ব কাটাতেই সেক্স ডল কিনেছিল তাঁর ছেলে। তবে কোলবির মায়ের সাফাই উড়িয়ে ক্রিস্টন ট্রিকলের কাকা কোলবির বিরুদ্ধে তাঁর ভাইঝিকে খুনের অভিযোগ তোলেন তিনি। শেষপর্যন্ত আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয় কোলবি। গত বছর নভেম্বর মাসে ৫০ বছরের জন্য মুক্তির কোনও সম্ভাবনা ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।