পশ্চিমবঙ্গের পেটে সেঁধিয়ে যাবে গোটা মিশর! জনসংখ্যায় বিদেশকে টেক্কা দেয় ভারতের কোন রাজ্যগুলি?
এই সময় | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
জনসংখ্যার দিক থেকে গত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে শীর্ষে থাকা চিনকে ছাড়িয়ে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশে পরিণত হয়েছে, ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জ কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ২০২৩ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের পপুলেশন ফান্ড একটি নথি প্রকাশ করে। রাষ্ট্রপুঞ্জ কর্তৃক প্রকাশিত ২০২৩ সালের বিশ্ব জনসংখ্যা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের জনসংখ্যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২.৮ কোটি। আর চিনের বর্তমান জনসংখ্যা ১৪২.৫ কোটি। অর্থাৎ চিনের থেকে ভারতের জনসংখ্যা প্রায় ২৮ লক্ষ বেশি।কয়েক দশ ধরে চিন যে জনসংখ্য়ার তালিকা প্রকাশ করেছে তা দেখা গিয়েছে, জনসংখ্যা হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে সেদেশে। অন্যদিকে, ভারতের জনসংখ্য়া ক্রমেই বেড়েছে। কারণ হিসেবে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, আয়ু বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে জনসংখ্য়ার হার।
রাষ্ট্রসংঘের অনুমান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারতের জনসংখ্য়া হল ১৪৪ কোটি ১৭ লাখ ১৯ হাজার ৮৫২। ২০২২ সালে ভারতের জনসংখ্য়া ছিল ১.৩৯ বিলিয়ন (১৩৯ কোটি), আর চিনের জনসংখ্যা ১.৪১ বিলিয়ন (১৪১ কোটি)। ভারত এবং চিন দুই দেশ মিলিয়েই বিশ্বের জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ ধারণ করে। ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্য়া ছাড়িয়ে যায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি)।
ভারতের রাজ্যগুলি যদি আজ স্বাধীন দেশ হয়ে উঠত, তবে সেগুলি বিশ্বের শীর্ষ ২০ জনবহুল দেশের তালিকায় অর্ধেক স্থান দখল করত।শুধুমাত্র ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্য জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ হত।কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের সম্মিলিত জনসংখ্যার চেয়ে বেশি গুজরাটের জনসংখ্য়া।
বিশ্বের দেশগুলির জনসংখ্য়ার সঙ্গে ভারতের রাজ্য়গুলির জনসংখ্য়ার তুলনা (২০২২ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী)
ভারতের রাজ্যজনসংখ্যা(কোটিতে)যে দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায়উত্তর প্রদেশ ২৩.২ব্রাজিল + ইকুয়েডরবিহার১২.৯মেক্সিকোমহারাষ্ট্র১২.৫জাপানপশ্চিমবঙ্গ১০.১মিশরমধ্য প্রদেশ৮.৫তুরস্কতামিলনাড়ু৮.৪জার্মানিরাজস্থান৮.০ইউক্রেন + পোল্যান্ডগুজরাট৭.০থাইল্যান্ডকর্ণাটক৭.০যুক্তরাজ্যঅন্ধ্র প্রদেশ৫.৪মায়ানমারওড়িশা৪.৭স্পেনঝাড়খণ্ড৪.০ইরাকতেলেঙ্গানা৩.৮মালয়েশিয়া + সিঙ্গাপুরআসাম৩.৬কানাডাকেরালা৩.৫সৌদি আরবছত্তিশগড়৩.২পেরুপাঞ্জাব৩.১অস্ট্রেলিয়া + নিউজিল্যান্ডহরিয়ানা২.৯ভেনেজুয়েলাদিল্লী১.৯রোমানিয়াজম্মু ও কাশ্মীর১.৫জিম্বাবুয়েউত্তরাখণ্ড১.২বলিভিয়াহিমাচল প্রদেশ৭৫ লাখহংকংত্রিপুরা৪২ লাখক্রোয়েশিয়ামেঘালয়৩৮ লাখইরিত্রিয়ামণিপুর৩৪ লাখউরুগুয়েনাগাল্যান্ড২১ লাখস্লোভেনিয়াপুদুচেরি১৬ লাখবাহরাইনঅরুণাচল প্রদেশ১৭ লাখলাটভিয়াগোয়া১৫ লাখনিরক্ষীয় গিনিমিজোরাম১৩ লাখএস্তোনিয়াচণ্ডীগড়১২ লাখসাইপ্রাসদাদরা ও নগর হাভেলিএবং দমন ও দিউ৮ লাখগুয়ানাসিকিম৭ লাখম্যাকাওআন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ৪ লাখবাহামাসলাক্ষাদ্বীপ৭০ হাজারকেম্যান দ্বীপপুঞ্জ
এই তথ্য কিন্ত যথেষ্ট উদ্বেগজনক। পৃথিবীতে প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত। যদি ভারতের বিশুদ্ধ জল, উর্বর মাটি এবং বনভূমির মতো প্রয়োজনীয় সম্পদের প্রাচুর্যের রয়েছে তবে জনসংখ্যা বর্তমান হারে বাড়তে থাকলে সেগুলি বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারত সরকার জনসংখ্য়া নিয়ন্ত্রণ সংস্কারের জন্য জোর দিচ্ছে। তবে জাতির মঙ্গলের প্রতি নাগরিকদেরও কর্তব্য রয়েছে। সংস্কারের প্রতি মনোযোগ দেওয়া এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে ব্যবস্থা নেওয়া অন্য়তম কর্তব্য নাগরিকদেরও।