ঘিরে ধরেছিল হতাশা! আত্মঘাতী বাঁকুড়ার স্কুল শিক্ষক, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
এই সময় | ২৯ এপ্রিল ২০২৪
সোমবার এক শিক্ষকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়ায়। মৃতের নাম বীরেন্দ্রনাথ সরেন (৩৭)। সোমবার সিমলাপাল থানা এলাকার মাচাতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপরশোল গ্রামের ঘটনা।মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, বীরেন্দ্রনাথ সরেন ২০১৯ সালে সিমলাপালেরই ভূতশহর হাই স্কুলে কর্মশিক্ষা বিভাগের শিক্ষক হিসেবে তিনি কাজে যোগ দেন। বাড়িতে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী, আট ও দু'বছর বয়সী দুই ছেলে-মেয়ে ছাড়াও এক ভাই রয়েছেন। এদিন সকালে বাড়ির পাশেই একটি আম গাছে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তারাই পুলিশে খবর দেন। পরে সিমলাপাল থানার পুলিশ গ্রামে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। মৃত শিক্ষকের ভাই জীতেন্দ্রনাথ সরেন জানান, তাঁর দাদা দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তবে ঠিক কী কারণে মৃত্যু? তা স্পষ্ট নয় বলে দাবি করেন তিনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করে ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালের নিয়োগের প্যানেল বাতিল করে দেওয়া হয়। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষাক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে যায়। ইতিমধ্যেই এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য, এসএসসি। সোমবার মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠার কথা। স্বয়ং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এই মামলাটি শুনতে চলেছেন। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর কি স্থগিতাদেশ দেবে সুপ্রিম কোর্ট? এখন সব নজর সেই দিকেই।
যদিও বীরেন্দ্রনাথ সরেনের এই রায়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি চাকরি যায়নি এই শিক্ষকের। তিনি অন্য কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর বাজারে অনেক ধার দেনা ছিল বলে জানা যাচ্ছে। ওই শিক্ষকের সহকর্মীরাও শোক প্রকাশ করেছেন।
কাজের জায়গায় তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলা কমিয়েছিলেন কিনা, সেই বিষয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গত কয়েক সপ্তাহে তাঁর আচরণে কোনও বড় বদল এসেছিল কিনা, সেই বিষয়টিও নজরে রয়েছে তদন্তকারীদের।
তদন্তকারীদের কথায়, ‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট সামনে আসার পরেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হতে চলেছে। সমস্ত দিক বিবেচনা করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এদিকে ওই শিক্ষকের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবারের সদস্যরা।