রাজীব চক্রবর্তী: এসএসসি মামলায় হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ নয়। বদলে সুপার নিউমেরারি পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যকে। প্যানেল বহির্ভূত চাকরিকে জালিয়াতি বলে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। যোগ্য-অযোগ্য কী ভাবে বাছাই হবে তা নিয়েও প্রশ্ন। এদিন সুপার নিউমেরারি পোস্ট নিয়ে তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চান রাজ্যের আইনজীবী। তাঁর আশঙ্কা, স্থগিতাদেশ না দিলে ভোটের সময় পুরো মন্ত্রিসভাকে জেলে ঢুকিয়ে দেবে সিবিআই। তাতে সাড়া দিয়েছে কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের পুরো এসএসসি প্যানেল বাতিল। চাকরিহারা ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও চাকরিহারারা। পাশাপাশি, আগে থেকেই ক্যাভিয়েট দাখিল করেছিলেন হাইকোর্টে মূল মামলাকারীরা। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য।প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ওএমআর নষ্ট করা হয়েছে। প্যানেলের বাইরে থাকা প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন। এ তো মস্ত বড় দুর্নীতি! তিনি প্রশ্ন করেন, কেন সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি হল? কমিশনের আইনজীবী বলেন, আমরা অনেকগুলি বিষয় তুলতে চাই। যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা হয়নি। সিবিআইয়ের রিপোর্টে তার উল্লেখ আছে। প্রধান বিচারপতি সেই সময় জানতে চান, ওএমআর নষ্ট করা হয়েছে। যোগ্য অযোগ্যদের চিহ্নিত করা হবে কী ভাবে? কমিশনের আইনজীবী উত্তর দেন, আমাদের কাছে অন্য পথ আছে। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, এত মানুষের ভবিষ্যত্ জড়িত। তাই, সব দিক খতিয়ে দেখতে হবে। যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করা যায় কি না দেখতে হবে।এদিন শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী আবেদন করেন, সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের উপর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তাতে যদি স্থগিতাদেশ না দিলে ভোটের সময় পুরো মন্ত্রিসভাকেই জেলে ঢুকিয়ে দেবে সিবিআই। রাজ্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ সামনে আসতেই নতুন করে শুরু চাপানউতোর। এদিন প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, দুর্নীতির সুবিধাভোগী কারা তা দেখতে হবে। ৬ মে ফের শুনানি মামলার।এদিন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষিতে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে বলে দেওয়া হয়েছে যে বিষয়টিতে জালিয়াতি হয়েছে এবং সেখানে যোগ্য অযোগ্যদের মধ্যে ফারাক করার মতো কোনও পন্থা উঠে আসেনি । সেই কারণেই হাইকোর্টকে এই ধরনের রায় দিতে হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সঙ্গে এটাও জানতে চেয়েছ, ওএমআর শিট কী করে নষ্ট হয়ে গেল? এটা একটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এবং এই দুর্নীতিকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ২০১৬ সালের ওএমআর শিট ৩ বছরের বদলে ১ বছর রাখার রাস্তা বের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আজকের এই পর্যবেক্ষণের পরে আমার মনে হয় না এই সরকারের পশ্চিমবঙ্গে থাকার কোনও ভিত্তি আছে।"