স্কুলের হাল ফেরাতে বড় উদ্যোগ! শিক্ষকদের বিশেষ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা শিক্ষা দফতরের
এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
বিদ্যালয় আছে, শিক্ষক নেই। কোথাও আবার শিক্ষক থাকলেও বিদ্যালয়ে পাঠ্যদান করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। কখনও শিক্ষকদের ক্লাসে এসে ফিরে যেতে হয় কিংবা চুপচাপ হাঁ করেই বসে থাকতে হয় পড়ুয়ার অভাবে, কোনও বিদ্য়ালয়ে আবার পড়ুয়ারা আসলেও শিক্ষকদের দেখা মেলে না। দিনের শেষে বইখাতা, ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয় পুড়ুয়াদের। কোথাও আবার শিক্ষকরা ঠিক মতো পড়ান না, পড়ুয়াদের শিক্ষাদানে সেরকম ভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন না বলেও অভিযোগ ওঠে। পড়াশোনার বিষয়ে পড়ুয়ারা কোনও বিষয়ে জানতে আগ্রহী হলে সেই বিষয়ে শিক্ষকরাও তাদের 'গাইড' করতে পারেন না বলে অভিযোগ ওঠে। এক কথায় একাধিক স্কুলের অবস্থা তথৈবচ। এবার সেই শিক্ষা ব্যবস্থার হাল ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। শিক্ষা দানের দিক থেকে যেসব স্কুলের মানদণ্ড নড়বড়ে সেই সব স্কুলের শিক্ষকদের বিশেষ ট্রেনিংয়ে ব্য়বস্থা করা হচ্ছে।কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দফতর?
শিক্ষার মান উন্নয়নে জন্য় একাধিক নয়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে শিক্ষা দফতর। রাজ্যের শিক্ষা ব্য়বস্থার দুর্বল কাঠামোকে মজবুত করাই এখন অন্যতম লক্ষ্য। কথা হচ্ছে বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। সেখানকার দুর্বল শিক্ষা ব্য়বস্থার উন্নতিতে জোর দিচ্ছেন বিহারের শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কে কে পাঠক। যে সব বিদ্যালয়গুলি পঠন পাঠনের দিক থেকে দুর্বল সেই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারি স্কুলগুলোর পারফরম্যান্সের উপর নজর রাখবে শিক্ষা দফতরের টিম।
রাজ্যের স্কুল শিক্ষার উন্নতিতে নিযুক্ত শিক্ষা দফতর ও পাঠ্যদানের দিক থেকে দুর্বল স্কুলগুলির শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। জুলাই মাস থেকে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এজন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিদ্যালয়গুলির কর্মক্ষমতাও পর্যবেক্ষণ করবে বিভাগীয় টিম।
এই কর্মসূচির প্রধান ফোকাস হবে পঠন পাঠনের দিক থেকে দুর্বল পারফরম্যান্সের বিদ্যালয়গুলির মান উন্নয়ন। এতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য একাধিক প্যারামিটারে কাজ করা হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিদর্শন: রিপোর্টের ভিত্তিতে দুর্বল কর্মক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যালয়গুলোকেও চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রতি কর্মদিবসে বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় শিক্ষা দফতরের কর্মকর্তারা 'মিশন দক্ষিণ' কর্মসূচির বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরিচালিত বিশেষ ক্লাসগুলোও মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এতে শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি তাদের শেখার ক্ষমতার বিকাশ নিয়েও গবেষণা করা হচ্ছে। পড়ুয়ারা যাতে আরও বেশি করে লাইব্রেরিমুখো হয় সেই বিষয়ে পড়ুয়াদের উৎসাহ জোগাচ্ছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষা দফতরের মতে, যেসব স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের শিক্ষাদানের মান দুর্বল সেইসব স্কুলগুলির শিক্ষকদের জেলা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (DIET) মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যেগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশের আলোকে ভাইব্রেন্ট এক্সিলেন্স ইনস্টিটিউট হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গৃহীত সকল উদ্ভাবন ও মানদণ্ডের ভিত্তিতে শিক্ষকদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি জেলা শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (DIET) বিদ্যা পরীক্ষা কেন্দ্র নামে একটি মনিটরিং সেন্টারও প্রতিষ্ঠা করা হবে।