এই সময়, মুর্শিদাবাদ: কংগ্রেসের অধীরের বিরুদ্ধে লড়ছেন আর এক অধীর। বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন অন্য এক মহম্মদ সেলিম। নির্দল প্রার্থী হিসেবে দু’জনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে ‘নেমসেক’ নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদে। প্রায় একই নামে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর পিছনে তৃণমূলের চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছেন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা করেছেন অধীর স্বর্ণকার।বহরমপুরের বানজেটিয়ায় সরকারি দপ্তরের অস্থায়ী কর্মী অধীর, বাম রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। হালে অবশ্য সেই বিশ্বাসে খানিকটা চিড় ধরেছে। নিন্দুকরা বলছেন, যেহেতু অধীর নাম রয়েছে সেই কারণে তৃণমূল তাঁকে দাঁড় করিয়েছে। অধীর চৌধুরী কোটিপতি হলেও নির্দল অধীরের হাতে রয়েছে মাত্র ২৭ হাজার টাকা। তবে দু’জনের এক জায়গায় মিল রয়েছে। দু’জনেই মাধ্যমিক পাশ করেননি। অধীর স্বর্ণকার একবার গ্রাম পঞ্চায়েতে লড়াই করেছিলেন। পরাজিত হলেও এলাকার মানুষের বিপদে পাশে থেকেছেন নানাভাবে। মানুষের জন্য কাজ করতে তিনি লোকসভার লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন।
অধীর স্বর্ণকার বলেন, ‘২৫ হাজার টাকা খরচ করে মনোনয়ন জমা করেছি। ব্যাঙ্কে রয়েছে ২৭ হাজার টাকা। ছোট থেকে বাম রাজনীতি করি। বহুবার রক্ত দিয়েছি মানুষের প্রয়োজনে। তাই সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে।’ সমনামী নির্দল প্রার্থীর ব্যাপারে মাথা ঘামাতে রাজি নন অধীর। তিনি বলেন, ‘যে কেউ ভোটে দাঁড়াতে পারেন। এতে কোনও অসুবিধা নেই। গণতন্ত্রে সকলের অধিকার রয়েছে। এসবে বেশি গুরুত্ব দিতে রাজি নই।’
মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন আর এক মহম্মদ সেলিম। এক্ষেত্রে একই নামের দু’জন প্রার্থী হওয়ায় ভোট এদিক ওদিক হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম এই যাত্রায় রক্ষা পেয়েছেন। কাগজপত্রে ত্রুটি থাকার কারণে নির্দল সেলিমের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্দল প্রার্থী মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘ভোটে লড়াই করার খুব ইচ্ছে ছিল। কাগজের কিছু গরমিলে বাতিল হয়েছে।’ সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘মানুষকে নামের গেরোয় ফেলে ফায়দা তোলাই বিরোধীদের উদ্দেশ্য। তৃণমূল বুঝে গিয়েছে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। আর সেই কারণে এই ধরনের গোঁজ প্রার্থীর সাহায্য নিয়েছিল।’ তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের মতে, ‘এই ধরনের গোঁজপ্রার্থীরা অনেক সময় ভালো ভোট টানেন। শুধু তাই নয়, তাদের এজেন্টদেরও কাজে লাগানো যায়।’ তবে বাম ও কংগ্রেসের অভিযোগ উড়িয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘কে কোথায় মনোনয়ন দিচ্ছেন, তা জানা সম্ভব নয়।’