এসএসসি-র প্যানেল বাতিল ইস্যুতে বাম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন চাকরিহারাদের একাংশ। আর এবার তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি বিক্ষোভ প্রদর্শন, তাও আবার কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরেই। আজ প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে। সেই মামলায় মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। প্রাথমিকের বিকৃত ওএমআর শিট নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন, কীভাবে প্রাথমিক নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিটে কারচুপি হয়েছে, তা নিয়ে সওয়াল করতে দেখা যায় বিকাশরঞ্জনকে। এর পর শুনানি শেষে বিকাশরঞ্জন এজলাস থেকে বেরোতেই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। সঙ্গে শুরু হয় স্লোগান।বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বিকাশের জন্যই চাকরি হারাতে হচ্ছে অনেককে। বিকাশই 'চাকরি খেয়ে নিচ্ছেন' বলেও দাবি করেন বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ। যদিও বিক্ষোভের মুখে পড়ে কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি বিকাশরঞ্জনকে। হেঁটে সোজা বেরিয়ে যান তিনি। এদিকে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এরপর পুলিশই বিক্ষোভকারীদের ওই জায়গা থেকে সরিয়ে দেয়। এই সংক্রান্ত একটি রিল শেয়ার করেছেন তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন এসএসসি-র চাকরিহারাদের একাংশও। এই বিষয়ে সোমবার জয়ীতা বসু নামে এক চাকরিহারা বলেন, 'বিকাশবাবুকে বলার কোনও ভাষা নেই, বামফ্রন্ট কীভাবে এখনও দলে রাখছে বিকাশবাবুকে? প্যানেল জড়িত ছিল না। ৯২ নম্বর পাতায় পরিষ্কার করে উল্লেখ করা আছে। তিনি প্যানেলকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হচ্ছে এসএলএসটি, গ্রুপ সি-গ্রুপ ডি নিয়োগের পরিক্ষা হচ্ছে আরএলএসটি, তিনি দু'টি পরীক্ষাকে একসঙ্গে মার্জ করেছেন, কারণ এই রায়টা বের করবেন বলে।'
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই এসএসসি মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ে ২০১৬ সালের প্যানেলটিকে পুরোপুরি বাতিল করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার, এসএসসি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সোমবার শীর্ষ আদালতে মামলার শুনানি ছিল। তবে সেই শুনানিতে এখনই হাইকোর্টের প্যানেল বাতিলের রায়ের উপরে কোনওরকম স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী সোমাবার।
এদিকে এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কুণাল ঘোষও। এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল লেখেন, 'বাম, কংগ্রেস, বিজেপি মুখে বলছে যোগ্যদের চাকরি চাই। কিন্তু ভুল সংশোধন করে তৃণমূল সরকার যখন যোগ্যদের চাকরির চেষ্টা চালাচ্ছে, তখন ওদের উকিলরা গোটা প্যানেল বাতিলে মরিয়া। এই দ্বিচারিতা মানুষ বুঝতে পারছে। এরা সব লন্ডভন্ড করে শুধু রাজনৈতিক ফায়দা চাইছে। এই দ্বিচারিতার মুখোশ খুলছে।'