• Columbia University : কলম্বিয়া কর্তৃপক্ষকে খোলা চিঠি ভারতীয় শিক্ষাবিদদের
    এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভে এখন সামিল বিশ্বের অন্তত ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার পড়ুয়া। ক্যাম্পাসে শান্তি ফেরাতে চলছে ব্যাপক ধরপাকড়ও। গত ১০ দিনে গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৯০০ পড়ুয়া! তবে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়েছিল নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে।ইজ়রায়েলের সঙ্গে সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন করতে হবে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে, এই দাবিতে প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন পড়ুয়ারা। ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে প্রতিবাদ করা পড়ুয়াদের উপর শুরু হয়েছিল পুলিশি লাঠিচার্জ, চলেছিল ব্যাপক ধরপাকড়। এই পুলিশি অতি-সক্রিয়তার বিরুদ্ধে এবার কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্টকে খোলা চিঠি লিখলেন ভারতীয় শিক্ষাবিদদের একাংশ। তাঁদের অধিকাংশই বিশ্বের বিভিন্ন নামজাদা ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। রয়েছেন কোয়ান্টাম মেকানিক্স, ব্ল্যাক হোল সংক্রান্ত গবেষক সুব্রত রাজু, গায়েত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের মতো ব্যক্তিত্বও।

    প্রায় হাজার জনের নামাঙ্কিত এই চিঠির বক্তব্য, ‘কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্যালেস্তাইনপন্থী প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তারের জন্য যে ভাবে নিউ ইয়র্ক পুলিশকে ডাকা হয়েছে, তার প্রতিবাদেই এই চিঠি। এই পড়ুয়ারা গাজ়ায় ইজ়রায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ইজ়রায়েলি আগ্রাসন ইতিমধ্যে অন্তত ৩৪ হাজার প্যালেস্তিনীয়ের প্রাণ কেড়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চও ইজ়রায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা করেছে।

    এত কিছুর পরও ইউএস এই হিংসায় ইজ়রায়েলকে মদত দিয়ে গিয়েছে, কূটনীতির নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচিয়েছে। কলম্বিয়া এবং ইউএসের অন্যত্র পড়ুয়ারা যে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সেই সদিচ্ছাকে আমরা কুর্নিশ জানাই। তাঁরা নিজেদের সরকারের পাশে না দাঁড়িয়ে যে ভাবে প্যালেস্তিনীয়দের মানবাধিকার রক্ষা এবং ইজ়রায়েলের মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স থেকে ইউএস বিনিয়োগ প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।’

    চিঠির প্রেরকদের দাবি, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ পড়ুয়াদের সঙ্গে সহমত না-ই হতে পারেন, কিন্তু পড়ুয়াদের মতামতকে সম্মান দিয়ে তাঁদের অধিকার রক্ষা করা বিশ্ববিদ্যালয়েরই দায়িত্ব। চিঠির বক্তব্য, ‘প্রতিবাদ পঠনপাঠনে বিঘ্ন ঘটায় ঠিকই, কিন্তু এটাই বিক্ষোভের চরিত্র, বিশেষ করে তা যদি এমন সিরিয়াস বিষয়ে হয়। আপনাদের পুলিশ ডাকার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক চরিত্রে আঘাত করেছে। আমাদের আর্জি, প্রতিবাদীদের উপর চাপানো শাস্তির খাঁড়া অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক, গ্রেপ্তার হওয়া পড়ুয়াদের মুক্তি দেওয়া হোক।’

    তবে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ দমনের চেষ্টা চললেও অন্যত্র মাথাচাড়া দিচ্ছে বিক্ষোভ। এদিনই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ইভি লিগ স্কুলে ইউএস ফ্ল্যাগের জায়গায় প্যালেস্তাইনের পতাকা তুলেছেন পড়ুয়ারা। যে ওয়াশিংটন হিলটন হোটেলে হোয়াইট হাউস কোরেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ডিনার ছিল, সেখানের টপ-ফ্লোর উইন্ডোতে ওড়ানো হয়েছে প্যালেস্তিনীয় পতাকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিক্ষোভ দমনই এখন প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
  • Link to this news (এই সময়)