মনের জোরে সেনাবাহিনীতে যোগ ট্যাক্সি চালকের ছেলের, আনন্দে আত্মহারা পরিবার
এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র ছিল নিত্যসঙ্গী। বাবার ট্যাক্সি চলানোর ন্যূনতম রোজগারেই চলত পরিবার। সেই পরিবারের ছেলের কঠিন অধ্যাবসায় দেখিয়ে দিয়েছে ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। মহারাষ্ট্রের বারমের জেলা সদরের ৩ নম্বর এলাকার ছবিটাই এখন বদলে গেছে। কারণ এখানকারই বাসিন্দা পেশায় ট্যাক্সি চালক মানারাম দাগলা।মানারামের ছেলে হরিশ কুমার দাগলা মহারাষ্ট্রের কুয়ান নম্বরে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বারমের জেলা সদরের ৩ নম্বর এলাকায় তাঁর বাড়িতে ভিড় করেন আশেপাশের লোকজন। একজন ট্যাক্সি চালকের ছেলের সৈনিক ছেলেকে অভ্যর্থনা জানান তাঁরা। ছেলেকে সেনার পোশাকে দেখে আনন্দে কাঁদতে শুরু করেন বাবা মানারম এবং তাঁর স্ত্রী। ছেলের মাথায় হাত রেখে তাঁকে আশীর্বাদ করেন মা। রীতিমতো ঢাক ঢোল বাজিয়ে ফুলের মাল বোঝাই করে হরিশকে অভিনন্দন জানান গোটা গ্রামের মানুষ।
আনন্দের প্রতিটা মুহূর্ত উদযাপনের জন্য ফাটানো হয় ফটকা, কাটাহয় কেক। আজ হরিশের বাবা মায়ের জন্য একটি অত্যন্ত গর্বের দিন ছিল। কারণ তাঁদের ছেলে প্রথম বারের মতো সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরে বাড়ি ফিরেছিলেন। মানারামের ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে হরিশের ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর অংশ হওয়া। কলেজের প্রথমবর্ষে NCC-র অংশ হয়েছিলেন হরিশ এবং তিন বছরের মধ্যে এটি একটি অঙ্গিকারে পরিণত হয়েছিল। তিনি এক-দুবারের প্রাথমিক ব্যর্থতার পরও হাল ছেড়ে দেননি। অবশেষে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীতে নিয়োগে সফল হন।
সেনার পোশাকে ছেলেকে দেখে ট্যাক্সি চালক বাবা মানারামের চোখে জল চলে আসে। তিনি বলেন, আজ খুব গর্বের দিন। সাধারণত তার উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করে তবে তাঁর ছেলের স্বপ্ন ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। যা তিনি তাঁর কঠোর পরিশ্রমে পূর্ণ করেছেন।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের কনস্টেবল হরিশ কুমার বলেন যে আমার মা সোমতি দেবী শিক্ষিত নন, কিন্তু সবসময় আমাদের দেশ সেবা করতে শেখান। তিনি বলেন, কলেজ ক্যাপ্টেন আদর্শ কিশোর জনীর অনুপ্রেরণামূলক কাজটি খুবই কার্যকর ছিল।
তিনি জানিয়েছেন যে, কোনও প্রাথমিক ব্যার্থতার কারণে কখনও থামানো উচিত নয়। এই কারণেই তিনি কখনো সাহস হারাননি এবং আজ বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের ইউনিফর্মে বাড়িতে পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, ক্রমাগত ব্যর্থতার মধ্যেও তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদানের স্বপ্ন লালন করেছিলেন।