• স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও গদাইচর যে-তিমিরে সেই তিমিরেই কেন'
    ২৪ ঘন্টা | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
  • রণজয় সিংহ: গদাইচর। বাংলার ভূখণ্ডের একটি অংশ। বাংলা ও ঝাড়খণ্ড-সীমান্ত লাগোয়া একটি গ্রাম। আসলে যা গঙ্গা নদীর উপর গজিয়ে ওঠা একটি চর। যেখানে বসবাস করেন কয়েক হাজার পরিবার। আজও সেই গ্রামে জ্বলে না কোনও আলো। রাত হলেই ভরসা লন্ঠন বা প্রদীপ। একটু অর্থবান পরিবারের ঘরে আলো জ্বলে বটে-- ব্যাটারির আলো। কয়েকশো বছর ধরে এই অন্ধকারেই রয়েছে এই গ্রাম।

    তবে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেন তাঁরা। পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা-- সব ক্ষেত্রেই ভোটদান করেন। কিন্তু সরকারি সাহায্যের সামান্যতম পরিষেবাও নেই এই গ্রামে বলে দাবি সেখানকার বাসিন্দাদের। স্বাধীন ভারতের ৭৫ বছরের পরেও মালদার মানিকচক ব্লকের হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গদাইচর আজও যে-তিমিরে সেই তিমিরেই। কৃষিকাজ এই এলাকার বাসিন্দাদের মূল পেশা। নদীপথই চলাচলের একমাত্র উপায় এঁদের। এই এলাকায় ভোটের সময় অস্থায়ী তাঁবুতে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র তৈরি করা হয়। লণ্ঠন বা প্রদীপের আলো বা জেনারেটর ব্যবহার করে আলোর ব্যবস্থা করা হয় এই কেন্দ্রে। কারণ বিদ্যুৎ নেই এলাকায়। নেই বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থাও। রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যূনতম পরিষেবা নেই এই এলাকায়। ভোট এলেও কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি বা প্রার্থীরা খুব একটা আসেন না এখানে ভোট ভিক্ষা করতে।এখানে দুইটি বুথ রয়েছে। প্রায় ১৪০০ ভোটার। তবুও ভারত-ভূখণ্ডে পরাধীনের মতোই বসবাস তাঁদের। এলাকার এক বাসিন্দা টুনিলাল মাহাতো বলেন, ভোটের সময় নেতারা আসেন। ব্যবস্থা করে দেবেন, এমন কথাও বলেন। এরপর ভোট পেরিয়ে গেলে আর আসেন না। আর-এক এলাকাবাসী বিজয় ঘোষ বলেন, ৪০ বছর ধরে বসবাস করি, ভোট এলে ভোটও দিই। কিন্তু সরকারি কোনও পরিষেবা পাই না। এই এলাকা থেকে নির্বাচিত নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য বাণেশ্বর কুমার মাহাতো জানান, ভোট এলে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে জেনারেটর দিয়ে আলো জ্বলে। কোনও ব্যবস্থা নেই এলাকায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ছাড়া আর কোনও দলই এখানে প্রচারে আসেনি। প্রতিবার অন্য দলের প্রার্থীরা আসেন। সুব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। তারপর আর ফিরে তাকান না।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)