গত কয়েক দিন ধরেই একাধিক রাজ্যে বার্ড ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ ছড়িয়ে পড়েছে। এতদিন পর্যন্ত যা জানা গিয়েছিল তাতে বার্ড ফ্লু শুধুমাত্র পাখির শরীরেই সংক্রমিত হয়। সম্প্রতি গরুর দুধেও অস্তিত্ব মিলেছে বার্ড ফ্লু। আর তারপর থেকেই বেড়েছে উদ্বেগ। এই বিষয়ে মুখ খুলল স্বাস্থ্য মন্ত্রক।কী জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে?
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম থেকেই বিষয়টিতে কড়া নজর রাখা হয়েছে। মরশুমী যত রকমের ফ্লু রয়েছে সবদিকেই নজর রয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে। স্বাস্থ্য় মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে 'মনিটারিং' চলছে। এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রাজ্যে H1N1 অর্থাৎ সোয়াইন ফ্লু নিয়ে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরামর্শ , দুধ ভালো ভাবে ফুটিয়ে খাওয়া উচিত। মাংসও যথাযথ ভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রক নজর রাখছে সিজেনাল ইনফ্লুয়েজ্ঞার পরিস্থিতির দিকেও।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফ্লুতে আক্রান্ত হন শিশু ও বয়স্করা। ঋতু পরিবর্তনের সময় বা অতিরিক্ত ঠান্ডা-গরমে ফ্লুয়ে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কোভিড পরবর্তী সময় থেকে 'কোমর্বিডিটি' শব্দটি বহুল প্রচলিত। যারা আগের থেকেই কোনও রোগে ভুগছেন বিশেষ সাবধানে থাকতে বলা হচ্ছে তাদের বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা মোকাবিলায়।
১৯৯৬ সালে প্রথম অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল বার্ড ফ্লু বা H5N1 ভাইরাসের। অনেকে বার্ড ফ্লুর ভয়ে মুরগির মাংস পুরোপুরি বর্জন করেছিলেন। অনেকে হাঁস-মুরগির ডিম খাওয়াও বন্ধ করে দেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে আমেরিকায় গরু ও ছাগলের দেহেও অস্তিত্ব মেলে এই ভাইরাসের। এরপরে নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পড়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের। ভারতেও বার্ড ফ্লুড ধরা পড়ে। ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে একটি পোলট্রি ফার্মের কাজে যুক্ত থাকা আট জনকে রাখা হয় কোয়ারানটিনে। এই ভাইরাসের সন্ধান মেলে কেরালার আলপ্পুজাহতেও। দ্য হাইলি প্যাথোজেনিক এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা H5N1 ভাইরাসে প্রাথমিক ভাবে পাখিরা আক্রান্ত হলেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে মানুষও। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা 'ক্লোজ কনটাক্ট' বা কাছাকাছি সংস্পর্শে আসার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
ইতিমধ্যেই ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন জানিয়েছে, এই H5N1 ভাইরাস একজন মানুষের মাধ্যমেই অন্যজনের দেহে ছড়াচ্ছে কিনা তার প্রমাণ এখনও মেলেনি। বিষয়টি পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। পাস্তুরাইজড দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।