ছয় মাস অন্তর এই টেস্ট জরুরি, কোভিশিল্ডের সাইড এফেক্ট নিয়ে মুখ খুললেন ডা: অরিন্দম বিশ্বাস
এই সময় | ৩০ এপ্রিল ২০২৪
কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিলে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা অর্থাৎ কোভিডের এই টিকার প্রস্তুতকারক সংস্থার স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। ভারতীয়দের মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মানুষ এই টিকা গ্রহণ করেছেন। সে ক্ষেত্রে কতটা ঝুঁকি রয়েছে? এখন কী করণীয় টিকাপ্রপাকদের? জবাব দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: অরিন্দম বিশ্বাস।জীবনদায়ী করোনা টিকা কোভিশিল্ড বহু মানুষকে করোনা আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। সেই টিকা নিয়ে এবার বড়সড় তথ্য ফাঁস করেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আদালতে তারা জানিয়েছে, কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রতিষেধকের কারণে বিরল রোগ থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে এই সময় ডিজিটালকে ডা: অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, 'এখনও পর্যন্ত ভারতে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছেন কোনও কোভিশিল্ড প্রাপক, এ কথা শোনা যায়নি। সেরাম ইনস্টিটিউটও তা জানিয়েছে। তবে এখন আবার ভ্যাকসিনের গুণমান দেখে নেওয়ার সময় এসেছে।'
ভারতীয় কোভিশিল্ড প্রাপকদের কি থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? এ প্রসঙ্গে ডা: অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, 'যারা এই টিকা নিয়েছেন তাদের প্রতিনিয়ত শারীরিক পরীক্ষা করানো উচিত। হার্টের অবস্থা কীরকম রয়েছে তা নজরে রাখতে হবে। আমার মতে, প্রতি ছয় মাস অন্তর হার্টের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করাতে হবে। টানা তিন থেকে পাঁচ বছর নিয়মিত এই পরীক্ষাগুলো করে শারীরিক অবস্থা খেয়াল রাখতে হবে। কোনও পরিবর্তন এলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।'
থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হলে কী পরিণতি হতে পারে? এই রোগে আক্রান্ত হলে রক্তে অণুচক্রিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। ডা: অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, 'এই রোগে মূলত ব্রেন কিংবা হার্টে ব্লাড ক্লট করে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে স্ট্রোক কিংবা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থাকে। টানা তিন থেকে পাঁচ বছর কোভিশিল্ড প্রাপকদের টানা পর্যবেক্ষণে রাখলে তবেই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বোঝা সম্ভব হবে।'
ভারতে অল্পবয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কি তবে কোভিশিল্ডের জন্যই? ডা: অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, 'এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে মনিটরিং করতে হবে, আদৌ এই ধরণের হার্ট অ্যাকাটের ঘটনা কোভিশিল্ডের সঙ্গে জড়িত কি না, তা জানতে গেলে আগামী পাঁচ বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক মনিটরিং করে হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা কিংবা উপসর্গ মিলিয়ে দেখতে হবে। বর্তমান প্রজন্মের লাইফস্টাইলের জন্য অল্পবয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা বাড়ছে। এখনই এই ধরণের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জুড়ে দিতে পারব না। এর কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।'