মানুষ যাতে ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন তার জন্য চালু হয়েছে হোম ভোটিং। ভোট গ্রহণের জন্য কমিশনের লোকেরাই পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ির দুয়ারে। এর ফলে বয়স্ক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমরা নির্ঝঞ্ঝাটে ভোট দিতে পারলেও সেটা এখন বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কমিশনের কাছে।নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, প্রথম দফার ভোটে কয়েক লক্ষ মানুষ হোম ভোটিংয়ের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেও দেশের একাধিক জায়গা থেকে গরমিলের খবর মিলেছে। হোম ভোটিংয়ের সুযোগ নিয়ে মৃত ভোটারের নামে ভোট দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দফার ভোটে হোম ভোটিংয়ের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। হোম ভোটিংয়ের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ ভোটে কারচুপি করতে না পারে তার জন্য এখন থেকে কড়া নজর রাখবেন কমিশনের প্রতিনিধিরা।
কমিশনের খবর অনুযায়ী, হোম ভোটিংয়ের সুযোগ নিয়ে এক মৃত মহিলার নামে ভোট দেওয়ার অভিযোগে কেরালায় তিনজন পোলিং অফিসার এবং একজন বুথ লেভেল অফিসার সহ মোট চারজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের আরও বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকেই এই ধরনের অভিযোগ সামনে এসেছে। তা নিয়ে বিচলিত কমিশনের কর্তারা।
কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘হোম ভোটিংয়ের সময় পোলিং অফিসার ছাড়াও বুথ লেভেল অফিসারদের সেখানে হাজির থাকার কথা। নিরাপত্তাকর্মীরাও সঙ্গে থাকেন। হোম ভোটিংয়ের সময় কোনও অনিয়ম ঘটলে তার দায় বর্তাবে সেই সব অফিসারদের উপর। প্রথম দফাতেই হোম ভোটিং নিয়ে যে ধরনের অভিযোগ আসছে সেটা আমাদের কাছে খুব চিন্তার বিষয়। বুথে যেরকম নজরদারি থাকে হোম ভোটিংয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটা ভিডিও রেকডিং করে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে এ নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে।’
কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, যাঁদের বয়স ৮৫ বছরের বেশি এবং বিশেষ ভাবে সক্ষমরা (৪০ শতাংশ) হোম ভোটিংয়ের সুযোগ পাবেন। এছাড়া জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত তাঁরাও বাড়িতে বসে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।
হোম ভোটিংয়ের জন্য ১২ডি ফর্ম পূরণ করে কমিশনের কাছে আবেদন জানাতে হয়। হোম ভোটিংয়ের দায়িত্বে থাকছেন দু’জন নির্বাচনী আধিকারিক, একজন বুথ লেভেল অফিসার এবং একজন নিরাপত্তারক্ষী। ব্যালট পেপার, আঙ্গুলে লাগানোর কালি সহ বিভিন্ন সরঞ্জান নিয়ে তাঁরা বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন৷ বাড়িতেই একটি সিক্রেট ভোটিং-কম্পার্টমেন্ট বানাতে বলা হয়েছে৷ তার সঙ্গে পিচবোর্ড সঙ্গে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ভোট প্রক্রিয়া শেষ হলে ব্যালট পেপারটিকে ভোটারের সামনেই একটি খামের মধ্যে ভরে খামের মুখ সিল করে দিতে হবে৷ তারপর সেটা চলে যাবে ট্রেজারিতে৷ ভোটগণনার দিন সবার প্রথমে এই ব্যালট পেপারগুলি খোলা হবে৷