• Hinglaj Mata Mandir: হিন্দুদের উৎসব ঘিরে সেজে উঠল পাকিস্তানের মন্দির, মরুতীর্থে ভক্তের ঢল
    এই সময় | ০১ মে ২০২৪
  • হিন্দুদের এক পবিত্র তীর্থক্ষেত্র পাকিস্তানের হিংলাজ মাতার মন্দির। প্রতি বছরের মতো এবছরও ধুমধাম করে পুজো হল হিংলাজ দেবীর। আর সেখানে ভিড় জমালেন হাজার হাজার হিন্দু ভক্ত। মুসলিম প্রধান দেশ পাকিস্তানের বুকে অবস্থিত এই হিংলাজ দেবীর মন্দির হাজার হাজার হিন্দু দর্শনার্থীদের ভিড় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তীর্থ যাত্রায় অংশ নিয়ে মায়ের মন্দির পৌঁছন ভক্তরা।

    খাদা আগ্নেয়গিরি পেরিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানে এই মন্দিরে পৌঁছেলেন হিন্দু-তীর্থযাত্রীরা। চলল নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান। শত শত সিঁড়ি বেয়ে কখনও বা পাথরের উপর দিয়ে খাড়াই পথ অতিক্রম করে পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে অগভীর গর্তে নারকেল ও গোলাপের পাপড়ি দিয়ে আরাধনা করেন ভক্তরা। একটি প্রাচীন গুহা মন্দিরে টানা তিন দিন ধরে চলল দেবীর উপাসনা। এভাবেই পাকিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ধুমধাম করে পূজিত হলেন হিংলাজ মাতা। হিংগোল নদীতে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ভারতের গঙ্গার মতো ধর্মীয় স্নানের সুযোগ মেলে।বালুচিস্তান প্রদেশের হিংগোল জাতীয় উদ্যানে পাকিস্তানের বৃহত্তম হিন্দু উৎসব হিংলাজ যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার শুরু হয়েছিল এই উৎসব, শেষ হয় রবিবার। আয়োজকদের আশা ছিল কমপক্ষে ১ লাখেরও বেশি হিন্দু অংশগ্রহণ করবেন এই উৎসবে। মুসলিম সংখ্য়াগরিষ্ঠ পাকিস্তানে বসবাস করেন ৪.৪ মিলিয়ন হিন্দু, জনসংখ্য়ার মাত্র ২.১৪ শতাংশ হিন্দু। হিংলাজ যাত্রা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য

    হিন্দু তীর্থযাত্রার মধ্য়ে একটি। প্রতি বছর দেশ জুড়ে প্রচুর সংখ্য়ক তীর্থযাত্রী হিংলাজ দেবীর দর্শনের উদ্দেশে রওনা দেন এই সময়ে।

    পূরাণ মতে, বালুচিস্তানের হিংলাজেই পড়েছিল সতীর ব্রহ্মরন্ধ্র। সিঁদুর লেপা এক খণ্ড পাথরই সর্বজনপূজিতা দেবী হিংলাজ। সঙ্কীর্ণ গিরিখাত, তার মাঝে রয়েছে একটি গুহা। আর সেই গুহাই মহাশক্তিস্থল। গুহাটির উচ্চতা কমপক্ষে ৩০ ফুট। চওড়ায় ৬০ থেকে সত্তর ফুট। নীচে বয়ে চলেছে হিঙ্গোল নদী। নদীটি যেন এই আছে, এই নেই! বর্ষায় ফুলে ফেঁপে উ‍ঠে এই নদী হয়ে ওঠে স্রোতস্বিনী। যে স্রোত রুদ্ধ করে দেয় গুহায় প্রবেশের পথ। মন্দিরের সবচেয়ে প্রবীণ ধর্মগুরু মহারাজ গোপাল ব্যাখ্যা করেছেন কেন বহু মানুষ এখানে এত ভিড় করে। তিনি বলেন, 'এটি হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র তীর্থযাত্রা। বিশ্বাস যাঁরা তিন দিনে তীর্থযাত্রা সম্পূর্ণ করে মায়ের পুজো করেন তাঁদের পাপস্খলন হবে।' ভক্তদের বিশ্বাস, যিনি যতই পাপ করে থাকুন না কেন, এমনকী পূর্ব জন্মের কোনও পাপ থাকলেও, এই মহাশক্তিস্থলে এলে সব পাপই বিলীন হয়ে যায়।

    এই হিন্দু উৎসব পাকিস্তানি ক্ষেত্রকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্ন্যাকস, পানীয়, গয়না এবং পোশাক বিক্রির জন্য তৈরি হয় শত শত স্টল। গরম খাবার তৈরি করা হয় উন্মুক্ত পরিবেশে বা খড়ের কুঁড়েঘরে। তীর্থযাত্রীরা মায়ের নৈবেদ্যের জন্য নারকেল, মিষ্টি, ফুল এবং ধূপ কিনে নিয়ে যান।

    হিংলাজ যাত্রা কোথা থেকে শুরু হয়?

    যাত্রা শুরু হয় বেশিরভাগই পার্শ্ববর্তী সিন্ধু প্রদেশ থেকে। হায়দরাবাদ,করাচি থেকে একাধিক বাস ছাড়ে। মকরান উপকূলীয় মহাসড়ক ধরে পাকিস্তানের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে আসেন যাত্রীরা। তবে হিন্দুদের এই পবিত্র স্থানগুলিতে পার্কিং ও যানবাহনের পরিষেবা কম। তাই অনেক তীর্থযাত্রী শুকনো, পাথুরে ভূখণ্ডের উপর দিয়ে হেঁটে দেবীর দর্শনের উদ্দেশে এগিয়ে যেতে থাকে। কখনও কখনও খালি পায়েও দেবীর দর্শনে যান তাঁরা। বিশ্বাস যত কষ্ট করে দেবীর দর্শনে যাবেন তত বেশি পূণ্যলাভ হবে। মূল রাস্তা থেকে কাদা আগ্নেয়গিরি পর্যন্ত পৌঁছতে অতিরিক্র করতে হয় কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। তারপর সেখান থেকে আবার হিংলাজ দেবীর মন্দির পর্যন্ত পৌঁছতে

    ৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে য়।
  • Link to this news (এই সময়)