• Covishield Vaccine News : 'কোভিশিল্ড নিরাপদ', সাইড এফেক্টের ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মাঝে আশ্বাস অ্যাস্ট্রাজেনেকার
    এই সময় | ০১ মে ২০২৪
  • কোভিশিল্ড টিকা নিয়েছেন? থাকতে পারে জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। করোনার এই টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্বে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে অ্যাস্ট্রেজেনেকা সংস্থাটি স্বীকার করে তাদের তৈরি কোভিশিল্ডে বিরল থ্রম্বসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই টিকাপ্রাপকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যা নিয়ে এবার সকলকে আশ্বস্ত করল ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাটি।অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক মুখপাত্র বলেন, 'যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন অথবা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের প্রতি আমরা সমব্যথী। রোগীদের সুরক্ষাই আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্পষ্টভাবে সমস্ত ওষুধ এবং টিকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছে।' বেনজির কিছু ঘটনা ছাড়া তাঁদের সংস্থা বারবার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং বাস্তবিক পরীক্ষামূলক তথ্যের উপর নির্ভর করেই টিকার নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা সুনিশ্চিত করে বলে উল্লেখ করেছেন এই অ্যাস্ট্রেজেনেকা মুখপাত্র। তাঁর কথায়, 'বিশ্বব্যাপী আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি আশ্বস্ত করে জানাতে চাইছে, টিকা নেওয়ার সুবিধাগুলি এই ধরনের অত্যন্ত বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকির চেয়ে অনেকটাই বেশি।'

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মিডিয়া রিপোর্ট মোতাবেক, প্রায় এক ডজন মানুষের কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ার পর জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এর মধ্যে একজনের মৃত্যুও ঘটেছে। যার পর তাঁদের পরিবারের তরফে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার প্রেক্ষিতে আদালতে নথি জমা দিয়ে কোভিশিল্ডের সাইড এফেক্টের কথা স্বীকার করে অ্যাস্ট্রেজেনেকা।

    ভারতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রেজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই করোনা টিকা উৎপাদন করেছিল সেরাম ইনস্টিটিউট। সেখানে ব্যবহৃ হয়েছিল শিম্প্যাঞ্জি অ্যাডিনোভাইরাস ChAdOx1.যা কোভিড-১৯ স্পাইক প্রোটিন মানুষের শরীরের কোষে পৌঁছে দিতে সহায়ক ছিল। এই ঠান্ডা ভাইরাসটি টিকা গ্রহীতার শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি এই ধরণের ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরকে লড়াই করার জন্য রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সম্পন্ন করে তোলে।

    এই একই পদ্ধতিতে ইবোলার ভ্যাকসিনও তৈরি করা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে ২০২৩ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম কোভিড-১৯ টিকা গ্রহীতাদের মধ্যে তৈরি হওয়া এক নয়া উদ্বেগ। যা মূলত অ্যাস্ট্রাজেনেকার ChAdOx1 এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি জ্যানসেন কোডিভ-১৯ Ad26.COV2-S ভ্যাকসিনের দিকেই ইঙ্গিত করেছিল।

    বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলে, 'থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম অত্যন্ত গুরুতর এবং প্রাণঘাতী রোগ। করোনাকালে ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে এই রোগ সম্পর্কে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য আমাদের অন্তর্বর্তী গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়েছে। এই রোগ নিয়ে প্রশাসন, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সচেতনা হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে হু।'

    চলতি বছরের মার্চ মাসে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য বলেন, 'ICMR একটি বিস্তারিত গবেষণার মাধ্যমে দেখে ভারতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুতর রোগের ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দায়ী নয়। অল্পবয়সীদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া তাদের লাইফস্টাইলের কারণে। আজ কারও স্ট্রোক কিংবা হার্ট অ্যাটাক হলেই কোভিড ভ্যাকসিনকে দায়ী করা হয়। তেমনটা সঠিক নয়। ICMR-এর গবেষণা তা প্রমাণ করছে।'
  • Link to this news (এই সময়)