'বাপের বেটা' দিলীপের মুখোমুখি 'খেলোয়াড়' কীর্তি, বর্ধমান-দুর্গাপুরে শেষ হাসি কার/
এই সময় | ০১ মে ২০২৪
বাংলার কৃষিতে বরাবরই উপরের দিকে থেকেছে বর্ধমান। আবার অভিভক্ত বর্ধমানে একটা সময় ছিল দুর্গাপুর-আসানসোলের মতো শিল্পাঞ্চও। যদি পরবর্তীতে এই জেলাকে ভেঙে পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান, এই দুই জেলায় ভাগ করা হয়। আর সেই দুই জেলারই কিয়দংশ বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেখানে একদিকে যেমন আছে কৃষি ক্ষেত্র, তেমনই রয়েছে শিল্পাঞ্চলও। সেই বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রেই জমে উঠেছে নির্বাচনী লড়াই।প্রার্থী কারা?এবারে নির্বাচনে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়াইতে রয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। বিজেপির হয়ে ময়দানে নেমেছেন দাপুটে নেতা তথা গেরুয়া শিবিরের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে সিপিএম-এর টিকিটে লড়ছেন সুকৃতি ঘোষাল। আগামী ১৩ মে চতুর্থ দফায় ভোটগ্রহণ হবে এই কেন্দ্রে। যার জন্য ইতিমধ্যেই জোরকদমে প্রচারও চালাচ্ছেন প্রার্থীরা।
জমে উঠেছে প্রচার২০১৯ সালে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে জয়ী হয়ে সংসদে পা রেখেছিলেন দিলীপ ঘোষ। যদিও তাঁকে এবারে সেই কেন্দ্র টিকিট দেয়নি বিজেপি। আর তা নিয়ে দিলীপকে অবশ্য খোঁচা দিতে ছাড়ছে না তৃণমূল। এমনকী প্রচারে কখনও লাঠি, কখনও গদা, কখনও আবার ডুগডুগি হাতে দেখা গিয়েছে দিলীপকে। তা নিয়েও বিজেপি প্রার্থীর সমালোচনায় সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। যদিও তাতে অবশ্য খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না দিলীপ ঘোষ ও তাঁর অনুগামীরা। পালটা কীর্তিকে আবার 'বহিরাগত' বলে খোঁচা দিয়েছে বিজেপি। একথায় বলতে গেলে আক্রমণ - পালটা আক্রমণে সরগরম হয়ে উঠেছে প্রচারের ময়দান।
এলাকার সমস্যী কী কী?প্রতিপক্ষের সমালোচনার পাশাপাশি বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন সমস্যাও সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলি হল বর্ধমান দক্ষিণ, মন্তেশ্বর, বর্ধমান উত্তর, ভাতার, গলসি, দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম। এর মধ্যে দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা ছাড়া বাকিগুলি অবস্থিত পূর্ব বর্ধমানে। দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা দু'টি পশ্চিম বর্ধমানের অন্তর্গত। এক্ষেত্রে পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই লোকসভা কেন্দ্রের যে বিধানসভাগুলি রয়েছে, সেগুলির অন্যতম সমস্যা হল রাস্তার বেহাল দশা, ভালো নিকাশী ব্যবস্থার অভাব, আলোর অভাব, ফুটপাত দখল ও পানীয় জলের সংকট। অন্তত এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের একটা বড় অংশের। নিজের প্রচারেও জল, রাস্তাঘাট ও এলাকার বিভিন্ন মাঠগুলির বেহাল দশা নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে দিলীপকে। অন্যদিকে আবার দুর্গাপুরের মানুষের অভিযোগ, এলাকার সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হল, দামোদর ব্যারেজে পলি জমে নাব্যতা কমে যাওয়া এবং বহু কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া। সেক্ষেত্রে যাবতীয় সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
বিগত ভোটগুলির সমীকরণমনে রাখতে হবে, গত লোকসভা ভোটে এই আসনটি ছিল বিজেপির দখলে। কয়েক হাজার ভোটে ওই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী এস এস আলুওয়ালিয়া। তবে জয়ের আলুওয়ালিকাকে এলাকায় খুব এখটা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এবার তাঁকে আসানসোলে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। এদিকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে শুধু দুর্গাপুর পশ্চিম ছাড়া বাকিগুলিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। দুর্গাপুর পশ্চিম দখল করে বিজেপি। সেক্ষেত্রে দেখার, এবারের নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে নিজের 'দম' দেখাতে পারেন কি না দিলীপ ঘোষ। নাকি দিলীপকে হারিয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত পাঠান কীর্তি।