'দলবদলু' তাপসের প্রশংসা করে দলের কোপে কুণাল, পদ কাড়ল তৃণমূল
২৪ ঘন্টা | ০১ মে ২০২৪
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: ফের বিতর্কের কেন্দ্রে কুণাল ঘোষ। বুধবার কুণাল ঘোষকে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল। মঙ্গলবার দলের তরফে বিবৃতি জারি করে এই ঘোষণা করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।এর আগে দলের মুখপাত্রর পদ থেকে কুণাল ঘোষকে সরিয়েছিল দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের তরফে। সম্প্রতি দলের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে বেশ কয়েকবার মন্তব্য করে বিপাকে জড়িয়েছিলেন তিনি।
বুধবার সকালেই কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী, একদা তৃণমূল বিধায়ক, তাপস রায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায় তাঁকে। সেই মঞ্চ থেকে তাপস রায়কে দরাজ সার্টিফিকেট দিতেও শোনা যায় তাঁকে।রক্তদান শিবিরের মঞ্চ থেকে কুণাল ঘোষ বলেন, 'তাপস রায় আমার প্রিয় কিন্তু এখন অন্য দলে'। তিনি আরও বলেন, 'তাপস রায় ভালো লোক, দক্ষ সংগঠক। কী করে তাঁকে খারাপ লোক বলব? অন্য দলে গেছেন বলে খারাপ বলতে পারব না'।পাশাপাশি ফের তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, 'সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন ব্লাড ডোনেশন শিবিরে ডাকা হল না তাঁর ভাবা উচিত। এগুলোতে ইনভিটেশন পেতে গেলে সারা বছর জনসংযোগ রাখতে হয়।' একই মঞ্চ থেকে কুণাল ঘোষ সম্পর্কেও ভাল কথাই শোনা যায় বিজেপি প্রার্থীর মুখে। তাপস রায় বলেন, 'কুণাল ভালো ছেলে। অনেকদিন ধরে চিনি। আমি অবাক হয়ে যাই ওর মহানুভবতা দেখে। বিনা অপরাধে জেলে থাকা সত্ত্বেও এখনও দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। আমি হলে করতাম না।'তৃণমূলের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ’সম্প্রতি, কুণাল ঘোষ এমন মতামত প্রকাশ করছেন যা দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এটা স্পষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ যে এগুলি তার ব্যক্তিগত মতামত এবং দলকে এর জন্য দায়ী করা উচিত নয়। শুধুমাত্র AITC সদর দফতর থেকে জারি করা বিবৃতিকেই দলের অফিসিয়াল অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।‘বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ঘোষকে এর আগে দলের মুখপাত্রের ভূমিকা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এখন তাকে রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সমস্ত মিডিয়া আউটলেটকে অনুরোধ করছি যে তিনি দলের সঙ্গে তাঁর মতামতকে মেলাবেন না, কারণ এটি করলে আইনি পদক্ষেপ করা হতে পারে।’ কিছুদিন আগে হঠাৎই বদলে যায় কুণাল ঘোষের এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো। তাঁর এক্স হ্যান্ডেলের বায়ো থেকে তৃণমূলের নাম মুছে যায়। এরপরেই সেখানে দেখা যায় নতুন বায়ো। বায়োতে তাঁর পরিচয় হিসেবে লেখা হয় তিনি একজন ‘সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী’। এরপরেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় জল্পনা।এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল লেখেন, 'নেতা অযোগ্য গ্রুপবাজ স্বার্থপর। সারাবছর ছ্যাঁচড়ামি করবে আর ভোটের মুখে দিদি, অভিষেক এবং দলের প্রতি কর্মীদের আবেগের উপর ভর করে জিতে যাবে, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করবে, সেটা বারবার হতে পারে না।'নাম না উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। ঘটনাচক্রে, কুণাল ঘোষ যখন এই মন্তব্য করেছেন, তার কয়েক ঘণ্টা আগে উত্তর কলকাতায় বৈঠক করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। ওই বৈঠকে কুণাল ঘোষকে দেখা যায়নি। এরপরেই তিনি বলেন 'তৃণমূল থেকে আমি যাচ্ছি না'। দলত্যাগের জল্পনা উড়িয়ে দেন কুণাল ঘোষ। বলেন, 'কোনও সমস্যা বারবার বলা হয়েছে, কোনও সমাধান হয়নি। মুখ ফুটে বলার জন্য, যদি কোনও একজন কর্মীকে শোকজের চিঠি, সাসপেন্ড, বহিষ্কার,.. আমি প্রস্তুত আছি। পদ ছাড়লে কর্মী থাকব, কর্মীর অধিকার কেড়ে নিলে সমর্থক থাকব'।