• অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পালিয়েছে স্বামী! সন্তানের নাম থেকে পদবি ছাঁটতে পুরসভায় মা
    প্রতিদিন | ০২ মে ২০২৪
  • অভিরূপ দাস: অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাঁকে রেখে চলে গিয়েছিল স্বামী। তাই কিছুতেই আর স্বামীর পদবি ব‌্যবহার করতে চান না স্ত্রী। এমনকী একমাত্র সন্তানের নাম থেকেও সরিয়ে দিয়েছেন তার বাবার ‘চৌধুরী’ পদবি। কিন্তু আর তা করতে গিয়েই বিপত্তি! স্কুলে-কলেজে চাইছে বার্থ সার্টিফিকেট। তাই  নতুন বার্থ সার্টিফিকেট চেয়ে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ‌্য বিভাগের দ্বারস্থ নমিতা সাহা (নাম পরিবর্তিত)।  
    ঝঞ্ঝাটের শুরু বছর পনেরো আগে। নমিতার দাবি, তাঁর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার কিছুদিন আগেই পালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। তার পর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই। কোনওরকম যোগাযোগ করার চেষ্টাও করেননি কেউ। নিয়ম অনুযায়ী কেউ না বলে নিরুদ্দেশ হয়ে গেলে তার নামে স্থানীয় থানায় মিসিং ডায়েরি করতে হয়। টানা ৭ বছর তিনি আর না ফিরলে, কোনও খোঁজখবর না পাওয়া গেলে আদালত ধরে নেয়, ‘‘ওই ব‌্যক্তি মৃত।’’ তখন কেউ চাইলে পুরনো পদবিতে ফিরতে পারে। তার জন‌্য কোর্টে লিখিত আবেদন করতে হয়। পুরো বিষয়টি একটি আইনি প্রক্রিয়া। তিক্ততা এতটাই যে নমিতা সেই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতেই চান না।

    তাঁর একটাই কথা, ‘‘নামের শেষে আমি কিছুতেই স্বামীর চৌধুরীপদবি ব‌্যবহার করব না।’’ নিজে নিজেই মেয়ের পদবিও বদলে নিয়েছেন তিনি। তা করতে গিয়েই তৈরি হয়েছে সমস‌্যা। জন্মের সময় এক পদবি। পরে আরেক পদবি। স্কুল, কলেজে ভর্তি হতে গেলে বিপাকে পড়ছে নমিতার মেয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ দেখাতে বলেছে জন্মের শংসাপত্র। এদিকে সেখানেও যে পদবিতে ‘চৌধুরী’লেখা!

    পুরসভার স্বাস্থ‌্য বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওঁর বিয়ে হয়েছিল যাঁর সঙ্গে তাঁর পদবি চৌধুরী। সেইমতো বিয়ের পর উনি চৌধুরী হয়েছিলেন। এমনকী যে ইস্ট এন্ড নার্সিংহোমে জন্ম হয়েছিল নমিতার মেয়ের সেখানকার নথিও খতিয়ে দেখেছে পুরসভা। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনও শিশু কোনও নার্সিংহোমে জন্ম নিলে ছুটির সময় সেখান থেকে ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সেই ডিসচার্জ সার্টিফিকেট স্থানীয় বরো অফিসে জমা দিয়ে, ফর্ম পূরণ করে বার্থ সার্টিফিকেট মেলে। সেই বার্থ সার্টিফিকেটে নমিতার মেয়ের পদবি চৌধুরী।

    নমিতার দাবি, স্বামী তাঁকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এর পর নিজে নিজেই উনি নিজের জন্মগত সূত্রে পাওয়া সাহা পদবি লিখতে শুরু করছেন। মেয়ের নামেও বসিয়েছেন সাহা। পুরসভা বলছে, বিষয়টি এত সহজ নয়। এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া।
  • Link to this news (প্রতিদিন)