মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত। মেধাতালিকায় বেশকয়েকজন ছাত্রীর নাম রয়েছে। মেয়েদের মধ্যে প্রথম বীরভূমের ইলামবাজারের পুষ্পিতা বাঁশুরি। আর শুধু মেয়েদের মধ্যেই নয়, সার্বিকভাবেও মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে বাঁশুরি। আগামীদিনে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা রয়েছে পুষ্পিতার।কী ভাবে করেছে পড়াশোনা?এই সাফল্যের পর পুস্পিতা জানায়, স্কুলের পড়াশোনা ছাড়াও দিনে কমবেশি ১০ ঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। কোনওরকম গৃহশিক্ষক ছাড়াই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে পুষ্পিতা। এক্ষেত্রে তার পাশে যেমন বাবা মা সর্বক্ষণ থেকেছেন, তেমনই সহযোগিতা করেছেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও তার মায়ের স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়ার পাশাপাশি উত্তর লিখে শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে তা দেখিয়ে নিত পুষ্পিতা। এভাবেই নিজেকে মাধ্যমিকের জন্য প্রস্তুত করেছে সে। পুষ্পিতার ইচ্ছা আগামীদিনে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার। আর তার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে সে।
ঋকের প্রশংসায় পুষ্পিতাজীবনে 'ভালো মানুষ' হতে চায় পুষ্পিতা। কিছুদিন আগে 'বোকা হতে চাই' বলে ভাইরাল হয়েছিল বীরভূমের লাভপুরের ছাত্র ঋক বাগদি। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল। আর পুষ্পিতারও খানিকটা তেমনই ইচ্ছা। পুষ্পিতা বলে, 'ওইটুকু একটা বাচ্চার মুখে এই কথা সত্যিই আমাকে অবাক করেছিল, যা তার ভালো মানসিকতা ও শিক্ষার প্রমাণ দেয়। আর আমি নিজে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলেও তা কাওকে না ঠকিয়ে নিজের যোগ্যতায় হতে চাই।'
'ছোট থেকেই প্ররিশ্রমী'পুষ্পিতার মা অবশ্য, যাবতীয় সাফল্যের জন্য মেয়ের অধ্যাবসায়কেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'খুবই ভালো লাদগছে, আমার আশা করেছিলাম যে কোনও স্থান পাবে, তবে এতটা ভালো হবে সেটা ভাবিনি।' তিনি আরও জানান, ছোট থেকেই প্রচুর পরিশ্রম করতে পারে পুষ্পিতা। ভালো কিছু করে দেখানো স্পৃহা বরাবরই তার মধ্যে দেখা গিয়েছে। সর্বক্ষণ পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থেকেছে পুষ্পিতা।
মেয়ের স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টাপুষ্পিতার স্কুল বাড়ির কাছাকাছি নয়। এমনও অনেকদিন গিয়েছে, যখন কোনও যানবাহন না পেয়ে বা সঙ্গে কাউকে না পেয়ে একাই হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করেছে পুষ্পিতা। আগামীদিনে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতে চায় সে। আর মেয়ের ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন তার বাবা মা।
প্রসঙ্গত, এবার মাধ্য়মিকে বেড়েছে পাশের হার। শতাংশের হিসেবে এবার প্রতি ১০০ জনে পাশ করেছে ৮৬.৩১ জন। গতবছর এই পাশের হার ছিল ৮৬.১৫ শতাংশ। জেলাভিত্তিক পাশের হারেও এবার পরিবর্তন এসেছে। এবার জেলাভিত্তিক পাশের হারে প্রথম স্থানে রয়েছে কালিম্পং। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে পূর্ব মেদিনীপুর এবং কলকাতা।
এবারে মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় সবচেয়ে বেশি জায়গা পেয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পরীক্ষার্থীরা। এই জেলা থেকে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে ৮ জন। এছাড়া দক্ষিণ দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুর থেকে স্থান পেয়েছে ৭ জন, বাঁকুড়া, মালদা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে ৪ জন, বীরভূম থেকে ৩ জন, কোচবিহার এবং হুগলি থেকে ২ জন পড়ুয়ারা মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে।