• নিত্যসঙ্গী দারিদ্র্য, চিকিৎসক হতে চায় মাধ্যমিকে ৬৪৭ পাওয়া সুমনা
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৪
  • কথায় বলে, যতই প্রতিকূলতা থাক, প্রতিভা কখন চেপে রাখা যায় না। আর সেই কথাই আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল এই বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্টে। চরম আর্থিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করেও মাধ্যমিকে ৬৪৭ নম্বর পেল সুন্দরবনের কৃষ্ণচন্দ্রপুরের শীতলা রোডে বাসিন্দা সুমনা হালদার। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় সে। তাই প্রয়োজন আর্থিক সহযোগিতা।বাতাসা কাটেন বাবাসুমনার বাবা সুভাষ হালদার পেশাগতভাবে বাতাসা কাটেন। সেই নিয়ে যান বাজারে। যা আয় হয়, তাই দিয়েই কোনওরকমে চলে সংসার তিনি। সুমনারা ৩ ভাইবোন। বড় দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। মাঝে সুমনা। আর তারপর রয়েছে ছোট ভাই। মা ছাপোসা গৃহবধূ। কৃষ্ণচন্দ্রপুরের শীতলা রোডের ছোট বাড়িতে বসবাস গোটা পরিবারের। সেখান থেকেই প্রভূত আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা করে এই সাফল্য পেয়েছে সুমনা।

    কোন বিষয়ে কত নম্বর?কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা করে এই সাফল্যের মুখ দেখেছে সুমনা হালদার। স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে সে। বিষয়ভিত্তিকভাবে সে পেয়েছে, বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৮৫, অংকে ৮৭, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯০ ও ভূগোলে ৯৯। যদিও এই নম্বরে খুশি নয় সুমনা নিজে। তার আশা ছিল ৬৬৫ থেকে ৬৭০ নম্বর পেতে পারে সে। যদিও সেটা অবশ্য হয়নি।

    ডাক্তার হতে চায় সুমনাসুমনা মনে মনে স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার। সেই কারণে নিট পরীক্ষায় বসতে চায় সে। সেই মতো প্রস্তুতিও নিতে চায়। যদিও সেক্ষেত্রেও বাধা আর্থিক অসঙ্গতি। তাই সুমনা ও তার পরিবারের আবেদন যদি সরকার বা কোনও সহৃদয় ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলে নিজের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার পথে এগিয়ে যেতে পারে সে।

    সুমনার সাফল্যে খুশি স্কুলএদিকে সুমনার এই রেজাল্টে খুশি তার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও। এই বিষয়ে কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি জানান, কোনওরকম গৃহ শিক্ষককে ছাড়াই ৬৪৭ নম্বর পেয়েছে সুমনা। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায় সুমনা। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা সুমনা আগামীদিনে চিকিৎসক হতে চায়। সুমনাকে স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষকই সাধ্যমত সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন। এক্ষেত্রে সুমনার মতো স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরও আবেদন, যদি কোনও সহানুভূতিশীল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়ায়, তাহলে নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারে সে।
  • Link to this news (এই সময়)