• Mumbai Hospital News: সেলফোনের টর্চ জ্বালিয়ে সি-সেকশন! ওটিতেই মৃত্যু মা ও শিশুর, কাঠগড়য়া নামী হাসপাতাল
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৪
  • হাসপাতালে ছিল না কারেন্ট। কাজ করছিল না জেনারেটরও। এমন পরিস্থিতিতেই সিজারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। তারপর আর কোনও আলোচনা না করেই সেলফোনের টর্চের আলোয় সরাসরি অস্ত্রোপচার। আর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল প্রসূতি এবং শিশুর।মর্মান্তিক এই ঘটনা কোনও অজপাড়াগাঁয়ের নয়। খোদ দেশের প্রধান বানিজ্য নগরী মুম্বইয়ের দেশের সবচেয়ে ধনী নাগরিক সংস্থা দ্বারা পরিচালিত একটি হাসপাতাল সুষমা স্বরাজ মাতৃসদনের ঘটনা। গ্রেটার মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের অধীনস্ত এই হাসপাতাল। যে কর্পোরেশনের বার্ষিক আর্থিক বাজেটের পরিমাণ ৫২ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১২ শতাংশ অর্থাৎ ৬,২৫০ কোটি টাকা শুধুমাত্র বরাদ্দ রয়েছে স্বাস্থ্যের জন্য।

    সূত্রের খবর, খুসরুদ্দিন আনসারি তাঁর ২৬ বছর বয়সী স্ত্রী সাহিদুনকে তাঁর প্রসবের জন্য সুষমা স্বরাজ মাতৃসদনে ভর্তি করান। মাত্র ১১ মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল ওই দম্পতির।

    পরিবারের অভিযোগ, সোমবার প্রসূতি হোমে বিদ্যুৎ চলে যায় এবং তিন ঘণ্টা জেনারেটর চালু হয়নি।

    পরিবারের তরফে জনানো হয়েছে যে একেবারে সুস্থ ছিলেন প্রসূতি। নয় মাসের মাথায় তাঁকে হাসপাতালে প্রসবের জন্যনিয়ে আসা হয়েছিল। এমনকি ওই প্রসূতির সমস্ত টেস্ট রিপোর্টও ঠিক ছিল। ২৯ এপ্রিল সকাল ৭ টায় ডেলিভারির জন্য নিয়ে যাওয়ার পরও সারাধিন ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। এবং অপেক্ষা করা হয় কখন রাত আটটায় চিকিৎসক আসবেন তার জন্য। অভিযোগ, প্রথমে নর্মাল ডেলিভারির কথা বলা হলেও পরে আত্মীয়রা ভিতরে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে পড়ে রয়েছে সাহিদুন। এরপরই হাসপাতালের তরফে একটি সাক্ষর চাওয়া হয় বাড়ির লোকের কাছে এবং জানানো হয় ফিট হয়ে যাওয়ায় আর নর্মাল ডেলিভারি সম্ভব নয়, প্রসূতির সি- সেকশান করার প্রয়োজন আছে। সেই সময়ই আচমকা বিদ্যুৎ চলে যায়। তবে অতোকিছুর পরও তাদের অন্য হাসাপাতালে রেফার না করে সেখানেই রাখা হয়। এরপর অপারেশন থিয়েটারে সেলফোনের টর্চ জ্বেলে প্রসব করানো হয়। সেই সময়ই মৃত্যু হয় শিশুসহ প্রসূতির। এই ঘটনার পরই চিৎকার করতে শুরু করেন প্রসূতির আত্মীয়রা সেই সময় বেগতিক দেখে অন্য হাসাপাতালে রেফার করা হয় রোগীকে এবং জানানো হয় তাদের হাসাপাতেল অক্সিজেন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।

    মৃতের পরিবারের অভিযোগ, প্রসূতি ও তাঁর শিসুর মৃত্যুর পরও অন্ধকারেই আরও একটি প্রসব করানো হয় ওই হাসাপাতালে। ঘটনারপরই হাসাপাতালের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। শেষপর্যন্ত বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন গোটা ঘটনাটির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

    ঘটনয় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবার। পরিবারের এতো বড় ক্ষতির পর অভিযুক্ত চিকিৎসক এবং কর্মচরীদেরও কঠোর শাস্তি পাওয়া ফচিত বলে জানিয়েছে মৃতের পরিবার।

    মৃতার স্বামী দুঃখপ্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি ন্যায়বিচার চাই। আমি সামান্য পরিমাণ উপার্জন করি এবং বিশেষভাবে সক্ষম। আমি অনেককষ্টে বিয়ে করেছি, আমারজীবন নষ্ট হয়ে গেছে।’

    একই দিনে সেলফোনের টর্চের সাহায্যে একই অপারেশন থিয়েটারে অন্য একটি প্রসবের অভিযোগ করেছে পরিবারটি।

    গোটা ঘটনায় বিজেপির প্রাক্তন কাউন্সিলর জাগৃতি পাটিল বলেছেন যে, তিনি মুম্বই উত্তর-পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থী মিহির কোটেচা-র সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁর অধীনেই হাসপাতালটি পড়ে। অবশেষে বিএমসি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

    তিনি বলেন, হাসাপাতালের অবস্থা খারাপ। এই হাসপাতাল নিয়ে আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে। কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • Link to this news (এই সময়)