নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে শান্তিপুরে তাঁত কাপড়ের হাটগুলি ঘুরে গেলেন রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। তাঁতশিল্পী এবং তাঁত ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা শোনার পাশাপাশি তাঁত শিল্প নিয়ে গত পাঁচ বছরে বিজেপি সাংসদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি সাংসদ বিধায়ক হিসেবে মুকুটমণির ভূমিকা কী ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন।
তাঁতশিল্পের জন্য শান্তিপুরের পরিচিতি। এখানকার বহু মানুষ তাঁতের উপরে নির্ভরশীল। শান্তিপুরের সুত্রাগড়ে রয়েছে তিনটি বড় তাঁত কাপড়ের হাট। যেখানে নদিয়া জেলার মানুষ ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে বহু মানুষজন কাপড় কিনতে আসেন। তাই তাঁতের সঙ্গে জড়িত শিল্পী, কারিগর, শ্রমিকদের নিজেদের দিকে টানতে আগেই সংগঠন তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছিল তৃণমূল। এ বার নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিপুরের সুত্রাগড়ে তাঁত কাপড়ের হাটে যান তৃণমূলের প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারী। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিভাস ঘোষ, শান্তিপুর শহর তৃণমূল সভাপতি নরেশলাল সরকার-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সেখানে তিনি তাঁত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।
তাঁত ব্যবসায়ী ও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, যন্ত্রচালিত তাঁতের দাপটে শান্তিপুরের হস্তচালিত তাঁত হুমকির মুখে পড়েছে। রয়েছে উৎপাদিত সামগ্রীর বিপণনের সমস্যাও। তাঁতে জিএসটি বসায় এই শিল্পকে আরও সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ভিন্ রাজ্য থেকে বিশেষত পশ্চিম ভারত থেকে আসা যন্ত্রচালিত তাঁতের কাপড়ের কাছে মার খাচ্ছে স্থানীয় হস্তচালিত তাঁত। ব্যবসায়ীদের একাংশ এ দিন তৃণমূল প্রার্থীর কাছে এই সব সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আগামী দিনে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুকুটমণি। তিনি বলেন, ‘‘আগামী দিনে তাঁত শিল্পীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই তাঁত শিল্পের জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে। বিপণনের জন্য চেষ্টা করেছে। এখানে পাঁচ বছর সাংসদ ছিলেন এক জন। তিনি শান্তিপুরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও শান্তিপুর, ফুলিয়া, নবদ্বীপের তাঁত শিল্পের সঙ্কট মেটাতে উদ্যোগী হননি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।"
জবাবে স্থানীয় সাংসদ তথা রানাঘাট কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘যিনি এ কথা বলছেন তাঁকে বিধায়ক হিসেবে ওই এলাকার মানুষ কতটা পেয়েছেন? তৃণমূলের তাঁতশিল্পের উন্নয়ন মানে তো তাঁত বিলি নিয়ে কাটমানি খাওয়া। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় তাঁত শিল্পীদের প্রশিক্ষণ, ঋণের সুবিধা-সহ একাধিক প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছি। ওরা কী করেছে আগে বলুক।’’