'এই লড়াই আমি লড়ব', এবার অডিয়ো বার্তায় এমনই মন্তব্য করতে শোনা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে আরও বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে রাজভবনের কর্মীদের সতর্ক করেছেন তিনি। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী। বৃহস্পতিবার সিভি আনন্দ বোস দাবি করেছিলেন, তাঁকে বদনাম করে ভোট বাজারে লাভ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।শুক্রবার সকালে কলকাতা থেকে কোচির উদ্দেশে রওনা দেন সিভি আনন্দ বোস। কলকাতা বিমানবন্দরে গাড়ি করে সোজা ভেতরে ঢুকে যান তিনি। শুক্রবার একটি অডিয়ো বার্তা দেন সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনের কর্মীদের উদ্দেশে সেই অডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল দাবি করেছেন, এটি কেবলমাত্র নির্বাচনের কৌশল। ভোটের মুখে তাঁকে অপদস্থ করার জন্য এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'কোনও কিছুই আমাকে দুর্নীতি বিরুদ্ধে লড়াই এবং হিংসা বন্ধ করার লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, 'আরও বড় রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ১৯৪৬-এর কুখ্যাত কলকাতা কিলিংয়ের জন্যও যদি আমাকে দায়ী করা হয় আমি অবাক হব না। আমি বাংলায় বিশ্রাম করতে আসিনি।’
রাজ্যপাল এদিন বলেন, ‘আপনাদের সমস্ত অস্ত্র বার করুন। আমি প্রস্তুত। আপনারা অস্ত্র শানান, আমি প্রস্তুত।’ এদিন বাংলায় সিভি আনন্দ বোস বলেন, ‘এই লড়াই আমি লড়ব। আমি বাংলার ভাই বোনেদের সম্মানের জন্য লড়ব।’ রাজ্যপালের এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার এক মহিলা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই মহিলা নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী বলে দাবি করেছেন।
এদিকে এই প্রসঙ্গে ডি জি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ রাজভবনের আউট পোস্টে একটি অভিযোগ আসে। সেখানে রাজভবনের একটি মহিলা কর্মী শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। রাজভবনের পুলিশ আউট পোস্ট থেকে এই বিষয়টি হেয়ার স্ট্রিট থানায় পাঠানো হয়। আমরা এই বিষয়টি নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছি।'
কিন্তু, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত কি আদৌ পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত? এই প্রসঙ্গে ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমাদের আইন বিভাগ ও সাংবিধান বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলা হবে। যেহেতু এই বিষয়টি স্পর্শকাতর এবং মহিলা এসেছিলেন, তিনি বিস্তারিত কথা বলেছেন, তাই তদন্ত করছি।' তবে আইন বিভাগ ও সাংবিধান বিশেষজ্ঞের পরামর্শ যে নেওয়া হবে তা স্পষ্ট করে দেন তিনি।
এদিন তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মহিলা কর্মীর অভিযোগ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, 'আমরা স্তম্ভিত। রাজ্যপালের রাজভবনে এই ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। যে মহিলা এই কথা বলছেন তিনি অসহায়, দরিদ্র। তিনি কাজের টাকা চাইতে গিয়েছিলেন। তার বদলে কী প্রস্তাব দেওয়া হল তাঁকে? এটা অপরাধ।'