এই সময়: ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকা অল্প সময়ের মধ্যেই শেষ। কিন্তু কেন? অর্থনীতিবিদ পরাকালা প্রভাকর মনে করেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই ধরনের প্রকল্পের তহবিল ফুরিয়ে যাওয়া দেশের অর্থনীতির পক্ষে মোটেই সুখকর নয়। কারণ, দেশে বেকার সমস্যা এতটাই বেশি যে এই ধরনের প্রকল্পে কাজের চাহিদা উত্তুঙ্গ পর্যায়ে থাকে।পরাকালার আর একটি পরিচয়, তিনি দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী। বিভিন্ন ইস্যুতে এর আগেও তিনি কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এবার এই অর্থনীতিবিদ হাজির হয়েছেন নিজের লেখা বই— ‘দ্য ক্রুকেড টিম্বার অফ নিউ ইন্ডিয়া, এসেজ অন এ রিপাবলিক ইন ক্রাইসিস’ নিয়ে। বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সেই বইয়ের প্রকাশ হলো।
প্রশ্ন উঠছে, প্রভাকরের যদি এই মত হয়, তা হলে ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের পাওনা কি সেই ফাঁদে আটকে? সরাসরি সে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে প্রভাকর বলছেন, ‘দেখতে থাকুন এই আমলে অনেক কিছুই ঘটবে।’
তিনি বলেন, ‘আবাস যোজনা বা অন্য প্রকল্পে কেন্দ্র ৭৫ হাজার টাকা দিচ্ছে। আর রাজ্য দিচ্ছে ৪ লক্ষ টাকা। সেখানে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রের দেওয়া নাম থাকতে হবে, মোদীজির ছবি থাকতে হবে। কিন্তু কেন? সেই প্রশ্ন করা যাবে না।’ এই প্রশ্ন করা নিয়েও অকপট প্রভাকর। তিনি বলেন, ‘দেশে বেকারত্ব এই জমানায় সব থেকে বেশি। ২৪ শতাংশ। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের বেকারত্বের হার মাত্র ১২ শতাংশ। এটা একটা তথ্য। কেন্দ্র জিডিপি নিয়ে অনেক ঢক্কানিনাদ করছে। কিন্তু আসল তথ্য হলো মাথা পিছু আয়ের দিক থেকে আমাদের দেশ ১৩৯ নম্বরে।’
প্রভাকর মনে করেন, এই সব তথ্য চাপা দিতেই কেন্দ্র বিভিন্ন সময়ে ইস্যু তৈরি করে। তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে দেশের ১০-১১ শতাংশ বাসিন্দা দরিদ্র। কিন্তু সরকার ৮১ কোটি মানুষকে কেন ফ্রি রেশন দিচ্ছে? এবং, তা আরও পাঁচ বছর চলবে।’ তাঁর মত, ‘সঠিক পদ্ধতি হলো এক বছর এই প্রকল্প চালানোর পরে রিভিউ করে দেখা উচিত যে, সকলের ফ্রি রেশন দরকার কিনা। হতে পারে কারওর কম লাগবে, কারওর বেশি লাগবে, কারওর প্রয়োজন নেই। কিন্তু দেশে গরিবি এমন পর্যায়ে রয়েছে যে, তা সম্ভব নয়।’
দেশে সাধারণ মানুষের অবস্থা কেমন? তা ব্যখ্যা করতে গিয়ে প্রভাকর বলেন, ‘কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। কেউ যদি প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, তা হলে দেখানো হবে যে, সেটি দেশের বিরুদ্ধাচারণ করা।’