West Bengal Governor Immunity Power : নেওয়া যায় না আইনি ব্যবস্থা, কোন রক্ষাকবচে 'সুরক্ষিত' রাজ্যপাল?
এই সময় | ০৩ মে ২০২৪
বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একটি শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায়। রাজভবনের এক মহিলা কর্মী তাঁর বিরুদ্ধে অশালীন ইঙ্গিত করার অভিযোগ তুলেছেন। তবে গুরুতর এই অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিশ। না কোনও তদন্ত করা যাবে, না তাঁকে এই মর্মে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা যাবে। জানেন এর কারণ কী?ভারতীয় সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী রাজ্যপাল বেশ কিছু বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী। এই ধারায় রাজ্যপালেদের রক্ষাকবচ দেওয়া হয়। যেখানে কোনও আদালতের কাছে তাঁরা জবাবদিহি করেন না। আর কী কী রক্ষাকবচ রয়েছে রাজ্যপালেদের?
পদে থাকাকালীন কোনও রাজ্যের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি প্রক্রিয়া চালানো যাবে না।রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা কিংবা জেল হেফাজতের রায় দিতে পারবে না কোনও আদালত।কোনও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যাবে না। এমনকী, তাঁকে অভিযুক্ত হিসেবেও উল্লেখ করা যাবে না।পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত প্রক্রিয়া চালাতে পারে।নিজের কার্যক্ষমতা কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যপাল কারও কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন।অনেকক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়ার পরও রাজ্যপালের পদের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের রামেশ্বর প্রসাদ বনাম ভারত সরকারের মতো উল্লেখযোগ্য আইনি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট সমস্ত অভিযোগ শোনার পর জানিয়েছিল, সংবিধান অনুযায়ী, রাজ্যপাল সুরক্ষাকবচের অধিকারী। কোনও পদক্ষেপ তাঁর বিরুদ্ধে করা যাবে না।
১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে অভিযুক্ত এল কে আডবানি, মুরলি মনোহর জোশী, উমা ভারতীর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রায় দেয়। কিন্তু, এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন কেবলমাত্র উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং। কারণ সে সময় তিনি ছিলেন রাজস্থানের রাজ্যপাল। সংবিধানের ৩৬১ ধারা অনুযায়ী তিনি সে সময় বিশেষ রক্ষাকবচ পান।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। কলকাতা রাজভবনে কর্মরত এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন। কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে সি ভি আনন্দ বোস জানিয়েছেন, তিনি সত্য ও ন্যায়ের পথে হাঁটেন।