তীব্র গরমে মানুষের মতো জেরবার পাখিরাও। এই গরমে তারা যেন একটু স্বস্তি পায়, সে জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে নিউ টাউনের বেশ কয়েকটি আবাসন। ব্যক্তিগতভাবে পাখিদের পাশে দাঁড়িছেন সেখানকার বেশ কিছু বাসিন্দাও। কোথাও ছাদে রাখা হয়েছে পাখিদের স্নানের জন্য বড় পাত্রে জল, আবার কোথাও পাখিদের বিশ্রামের জন্য তৈরি কর হয়েছে কৃত্রিম বাসা। সেই সঙ্গে জানলার গ্রিল থেকে শুরু করে ব্যালকনিতে রাখা হয়েছে মাটির জলের পাত্র। ঠান্ডা ফলও দিচ্ছেন অনেকে। বাসিন্দাদের এই উদ্যোগে খুশি জীববৈচিত্র পর্ষদের বিজ্ঞানী অনির্বাণ রায় বলছেন, ‘এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। প্রত্যেকেরই এই রকমের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তা না হলে অনেক পাখি অসুস্থ হয়ে পড়বে। মৃত্যুও হতে পারে।’নিউ টাউনের বাসিন্দা উজ্জ্বল গঙ্গোপাধ্যায় যেমন বাড়ির ছাদ ও বারান্দায় পাখিদের খাবারের জন্য মাটির পাত্রে পর্যাপ্ত জল রাখছেন প্রতিদিন। ছাদে রেখেছেন পাখিদের স্নানের জন্য বড় জলের পাত্র। উজ্জ্বলের কথায়, ‘গরমের সময়ে পাখিরা যাতে একটু স্বস্তি পায়, সে কথা মাথায় রেখে গরম পড়ার পর থেকেই এই ব্যবস্থা করেছি। দুপুরের দিকে অনেক পাখি আসছে ছাদে।’
নিউ টাউনের বেশ কয়েকটি আবাসনের তরফে পার্কিং লটে পাখিদের বিশ্রামের জন্য ছোট-ছোট বাসাও তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাটির পাত্রে রাখা হচ্ছে পর্যাপ্ত জল। একটি আবাসনের বাসিন্দা অর্ণব হাজারিকা বলেন, ‘পাখিদের পাশে দাঁড়াতে আবাসনের তরফে ৪০টি মাটির পাত্রে জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিন অনেক পাখি এসে জল খাচ্ছে।’
নিউ টাউনের বাসিন্দা মৌসুমি চৌধুরী, সুদেব রায়, বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়েরা বাড়ির বারান্দা এবং জানলার ধারে পাখিদের জন্য মাটির পাত্রে পর্যাপ্ত জলের পাশাপাশি তরমুজ, শসা, আঙুরের মতো ফলও রাখছেন নিয়মিত। মৌসুমি বলেন, ‘গরমে শুধু আমরা কষ্ট পাচ্ছি এমন নয়। পাখিদেরও কষ্ট হচ্ছে। সে জন্যই ওদের পাশে দাঁড়াতে জলের পাশাপাশি ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা ফলও দিচ্ছি।’
গরমে কী কী সমস্যা হতে পারে পাখিদের? পশু চিকিৎসক অমরেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘মানুষের মতো তীব্র গরমে পাখিদের শরীরও জলশূন্য হয়ে পড়ে। তাই এই সময়ে ওদেরও পর্যাপ্ত জল জরুরি। সেই সঙ্গে শসা, তরমুজ খেলে ওদের শরীর ভালো থাকে।’ জীববৈচিত্র পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোককান্তি সান্যালের পরামর্শ, ‘গরমে পাখিরা স্নান করতে খুবই ভালোবাসে। তাই ওদের জন্য ছাদে বা বারান্দায় যেখানে ছায়া আছে, সেখানে বড় পাত্রে জল রাখা যেতে পারে। এতে পাখিদের সুবিধা হবে।’