'বিয়ে করবেন?' ২ ডজনের বেশি বিবাহ বিচ্ছিন্না মহিলাকে ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা লুট যুবকের
এই সময় | ০৩ মে ২০২৪
প্রতারণা চক্রের হাজারও রকম ফন্দি এঁটে চলেছেন দুর্বৃত্তরা। অনলাইন মাধ্যমে নিত্য নতুন ছক কষ চলছে প্রতারণা চক্র। এই প্রতারণার ছক জানলে চোখ কপালে উঠবে। ম্যাট্রিমনি সাইটগুলিতে নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ব্যক্তি। টার্গেটই ছিলেন বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলারা। বিশেষ করে যেসব মহিলারা একা থাকেন বা নিজেদের বলতে সেরকম কেউ নেই তাঁদেরকে বেছে বেছে লিস্টে রাখতেন তিনি। তালিকায় রাখা হত মানসিক ভাবে দুর্বল মহিলাদেরও। কিংবা যাঁরা হয়তো নতুন জীবনসঙ্গিনী খুঁজছেন আগের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে। প্রথম সেই সব মহিলাদের নিজের ফাঁদে ফেলে, বিশ্বাস অর্জন করিয়ে 'আসল খেলা' শুরু করত ব্যক্তি। ব্য়ক্তিকে পাকড়াও করতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হয় পুলিশকে।কথা হচ্ছে হায়দরাবাদের বাসিন্দা ইমরান আলি খানকে নিয়ে। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ২৪ জনের বেশি মহিলাকে নিজের প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছে সে। বর্তমানে ইমরানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুম্বাইয়ের পাইধনি এলাকার বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সী এক শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ৪০ বছর বয়সী ইমরান ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটে নিজের প্রোফাইল তৈরি করেছিল। অভিযোগকারী শিক্ষিকা ২০২৩ সালের মে মাসে তাঁর সংস্পর্শে আসনে। পুলিশ জানায়, ইমরান নিজেকে নির্মাণ ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা চালিয়ে যায়।
ওই শিক্ষিকাকে ইমরান জানায়, তার এমসিএ (মাস্টার ইন কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন) ডিগ্রি রয়েছে। এমনকী তার দুই ভাই কানাডায় পড়াশোনা করছে বলেও জানায়। ইমরানের এমন কথায় সহজেই তার প্রতি আকৃষ্ট হন শিক্ষিকা। পুলিশ জানিয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা চালিয়ে গিয়েছে ইমরান। ধীরে ধীরে তাঁর বিশ্বাস অর্জনও করেছেন। এরপর মহিলাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেয় ইমরান। যখন ইমরান বুঝতে পারে সে মহিলার আস্থা করেছে তখনই আসল খেলা শুরু করে সে। প্রতারণার জাল বিস্তার করে।
নানান অজুহাতে মহিলার থেকে প্রায়শই টাকা নিতে থাকে ইমরান। পুলিশে মহিলা জানিয়েছে, ইমরান তাঁকে জানিয়েছিল মুম্বাইয়ের বাইকুল্লায় একটি ফ্ল্যাট কিনছে। বিয়ের পর দু'জনে সেখানেই থাকবে। এই প্লট কেনার নাম করেই ইমরান দফায় দফায় মহিলার কাছ থেকে প্রায় ২১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা লুট করে। ইমরান যে তাঁকে ঠকাচ্ছে তা বেশ কিছু দিন পর বুঝতে পারেন মহিলা। বারবার বলা সত্ত্বেও টাকা ফেরত দিচ্ছিল না সে। এরপর বাধ্য় হয়েই বিষয়টি মা-বাবাকে জানান মহিলা। ইমরানের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।
ইমরানকে ধরতে একটি দল গঠন করে পুলিশ। হায়দরাবাদ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, মরান আলি খান মুম্বাই, ধুলে, সোলাপুর, পারভানি, দেরাদুন, কলকাতা, লখনউ এবং দিল্লিতে দুই ডজনেরও বেশি মহিলার সঙ্গে প্রতারণা করেছে এর আগে। মহিলাদের কাছ থেকে নানা ছলাকলায় টাকা আদায় করে জুয়া খেলত সে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে তেলেঙ্গানার দবীরপুরা সহ আরও অনেক থানায় খুন, খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ, হামলা, আত্মহত্যায় প্ররোচনার একাধিক মামলা রয়েছে।