• Tamralipto Government Medical College : হাসপাতালে তাণ্ডব, প্রহৃত দুই চিকিৎসক গ্রেপ্তার ৪
    এই সময় | ০৩ মে ২০২৪
  • এই সময়, তমলুক:রোগীমৃত্যুকে ঘিরে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে রাতভর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে মৃতের পরিবারের বিরুদ্ধে। ডিউটিতে থাকা দুই চিকিৎসককে মারধরের পরে তাঁদের হস্টেলেও ইট-পাথর নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। আক্রান্ত দুই চিকিৎসককে উদ্ধার করে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে হামলার কথা প্রকাশ্যে এলে রাজ্যের একাধিক চিকিৎসক সংগঠন প্রতিবাদে সরব হয়।জুনিয়র ডাক্তাররা নিরাপত্তা চেয়ে হাসপাতালের মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন। চিকিৎসক সংগঠনগুলির অভিযোগ, ২০১৬-১৮ সালের মতো ফের হাসপাতালগুলিতে দুষ্কৃতী তাণ্ডব শুরু হয়েছে। শুধু হাসপাতালে নয়, বাইরেও চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি এগরার এক চিকিৎসক হলদিয়া থেকে ফেরার পথে দাবি মতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হয়।

    বুধবার রাতে পথ দুর্ঘটনায় আহত হন তমলুকের সোনামুই এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে কলকাতা রেফার করা হয়। পথেই তাঁর মৃত্যু হলে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাত ১টা থেকে দু’ঘণ্টা ধরে হাসপাতাল চত্বরে তাণ্ডব চালায় রোগীর পরিবার। তাদের সঙ্গে সামিল হয় স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। তবে ঘটনার পর মুখে কুলুপ এঁটেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

    ফোন না ধরায় তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য জানা যায়নি। জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘হাসপাতালে গোলমালের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কয়েকটি বাইক আটক করা হয়েছে। ঘটনার পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। তারপরেই হাসপাতালের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’

    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রোগীর সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যেতে বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাস্তার রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে চড়াও হয় রোগীর পরিবারের ১৫-২০ জন।

    দুই চিকিৎসক শায়ন চক্রবর্তী ও সুদীপ পালের উপরে হামলা চালানো হয়। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচতে দুই চিকিৎসক নিজেদের হস্টেলে পালানোর চেষ্টা করলে ইট-পাথর নিয়ে সেখানেও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। যদিও কোনওরকম চিকিৎসা না করিয়ে রোগীকে কলকাতায় রেফার করার অভিযোগ করেছেন মৃত যুবকের পরিবার।

    ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী, হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী বুদ্ধদেব গুচ্ছাইত বলেন, ‘একদল লোক বাইকে করে এসে হঠাৎ করে এক ডাক্তারবাবুকে মারধর শুরু করে। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন আরও এক ডাক্তারবাবু। আমরা ছুটে গেলে আমাদের উপরেও হামলা চালানো হয়। পুলিশ এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’ চিকিৎসকদের উপরে হামলার নিন্দা করেছে একাধিক চিকিৎসক সংগঠন। দোষীদের কঠিন শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি এসপি ও জেলাশাসকের কাছে অনলাইনে অভিযোগ করেছে তারা। জুনিয়র ডাক্তাররাও নিরাপত্তার দাবিতে হাসপাতালের মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
  • Link to this news (এই সময়)