অর্থনৈতিক মন্দা থেকে কিছুতেই রেহাই পাচ্ছে না পাকিস্তান। আটা, গমের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কিনতে পাকিস্তানের জনগনের নাভিশ্বাস উঠছে।একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছুদিন আগে করাচিতে এক কিলো আটা বা ময়দা বিক্রা হয়েছে ২৩০ পাকিস্তানি টাকায়। অথচ সেই দাম একলাফে এতোটাই বেড়েছে যে বর্তমানে এক কেজি আটা বা ময়দা কিনতে গেলে লাগছে কড়কড়ে ৮০০টি টাকা।
বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও পেট্রোল, ডিজেল এবং বিদ্যুতের দামও উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে।
পকিস্তানের দরিদ্র জনগন টকার জন্য এতোটাইমরিয়া হয়ে উঠেছে যে অনেক মানুষ তাদের কিডনি পর্যন্ত বিক্রি করতে বাদ্য হচ্ছে। কারণ তাছাড়া সংসার চালানো বা পেটে খাবার দেওয়ারা আর কোনও উপায় নেই। আর মানুষের এই অসহায় অবস্থার ফায়দা ওঠাতে পাকিস্তানে সক্রিয় হয়েছে কিডনি পাচারকারী চক্র।
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের শহরাঞ্চলগুলিতে গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। সেখানে টমটোর দাম ১৮৮ শতাংশ, পেঁয়াজের দাম ৮৪ শতাংশ, মশলারদাম ৪৯ শতাংশ বেড়েছে। তবে এই সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে রান্নার গ্যাসের দাম। ৩১৯ শতাংশ বেড়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। আর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। শুধুমাত্র শহরাঞ্চলেই নয়, ব্যাপকভাবে দাম বেড়েছে গ্রামাঞ্চলেও।
কিন্তু কেন এভাবে হু হু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসেরদাম বৃদ্ধি পাচ্ছে পাকিস্তানে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর পিছনে রয়েছে পাকিস্তানর বিপুল ঋণর বোঝা। ঋণ দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের উপর বেশকিছু শর্ত আরোপ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার। সেই শর্তের অংশ হিসেবে পাকিস্তান সরকার ভর্তুকি বন্ধ করে দিতে বাদ্য হয়েছে। এর ফলে সাধারণ জিনিসের দামও এখন আকাশ ছোঁয়া।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সংসদে মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে বলতে গিয়ে ভারতের প্রসঙ্গ টেনে বিরোধী দলনেতা জমিয়তে উলেমা-ই- ফজল-ের প্রধান মওলানা ফজলুর রহমান বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের তুলনা করে দেখুন। আজ ভারত সুপার পাওয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, আর আমরা দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে ভিক্ষা করছি।
গত কয়েকবছর ধরে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। অন্যদিকে, এক সময় পাকিস্তানের অংশ থাকা বাংলাদেশ এখন উন্নতি লাভ করেছে। যা দেখে ‘লজ্জিত’ খোদ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। কিছুদিন আগেই ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের উন্নয়নের তুলনা টেনে এনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশকে দেখলে লজ্জা লাগে।’