বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সাজিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার ছিল বহুদিনের। মিছিল নিয়ে এলাকা প্রদক্ষিণ করে কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান। এই দৃশ্য রোজই দেখা মিলছে রাজ্যে। এবার আরও এক দৃশ্য দেখা গেল পুরুলিয়ায়। মোষের পিঠে চেপে মনোনয়ন জমা দিতে গেলেন এক নির্দল প্রার্থী।পুরুলিয়া সহ গোটা জঙ্গলমহল জুড়ে নির্দল প্রার্থী দিচ্ছে কুড়মি সমাজ। তৃণমূল-বিজেপি বা অন্যান্য রানৈতিক দলের থেকে সমদূরত্ব বজায় রেখেছে এবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে লোকসভা নির্বাচনে লড়তে চলছেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। এবার পুরুলিয়া কেন্দ্রের জন্য আজ, শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিলেন কুড়মি নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনিক ভবনে মনোনয়ন পত্র জমা দেন অজিত প্রসাদ মাহাতো। মোষের পিঠে চেপে সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান তিনি। তাঁর সঙ্গে প্রচুর কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা সঙ্গে ছিলেন। নিজেদের কুড়মি সমাজের প্রতীকী পতাকা নিয়ে মিছিল করে জেলা প্রশাসনিক ভবনে যান অজিত। তবে, তাঁকে দেখা যায় একটি মোষের পিঠে চেপে মনোনয়ন জমা দিতে। অজিত মাহাতো বলেন, ‘আমি মনোনয়ন জমা দিয়েছি। আমরা কুড়মি সম্প্রদায়ের এসটি মর্যাদা এবং 'সারনা ধরম কোড'-এর জন্য লড়াই করছি...আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকেও রক্ষা করতে চাই।’
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর আসনগুলোতে গতবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিয়েছিল কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। এই জেলার আসনগুলোতে ভালো ফল করেছিল বিজেপি প্রার্থীরা। বেশিরভাগ আসনেই জয়লাভ করেন পদ্ম প্রার্থীরা। তবে, এবার কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তাঁরা।
কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি কোটার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে –এটাই তাঁদের মূল দাবি। আগে তাঁরা প্রিমিটিভ ট্রাইবের অন্তর্গত ছিলেন। এরকম ১৩টি আদিবাসী সম্প্রদায় ছিল। ১২টিকে এসটি কোটার অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে কিন্তু একমাত্র কুড়মি সমাজকে ওবিসি করা হয়। এখানেই আপত্তি তাঁদের। তাঁরা এই ওবিসি সংরক্ষণ চান না। এসটি কোটার আওতায় আনতে হবে বলে দীর্ঘদিনের দাবি কুড়মিদের। সেই দাবিকে সামনে রেখেই এবার নির্দল হিসেবে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মূল ক্ষোভ তাঁদের। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের সোনেজি একটা দূরত্ব বজায় রেখে চলেছে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ। যদিও, রাজ্য সরকারের তরফে বারংবার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তফসিলি জাতিভুক্ত করাটা কেন্দ্রীয় সরকারের উপর নির্ভর করছে।